নওগাঁর পত্নীতলায় বাগান দখল করে ৮০০ আমগাছ কেটে ফেলার অভিযোগ করেছেন মো. আবুল হোসেন নামের ফল ব্যবসায়ী।
জেলার ঐতিহ্যবাহী প্যারিমোহন গ্রন্থাগারে শুক্রবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এমন অভিযোগ করেন।
ফল ব্যবসায়ী আবুল হোসেন ঢাকার সাভার উপজেলার জালেম্বর এলাকার নিরাজ উদ্দীন দেওয়ানের ছেলে। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম দেওয়ান এন্টারপ্রাইজ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘নওগাঁর পত্নীতলার ব্যবসায়ী আনিছুর মোল্লা আমার বন্ধু। তার মাধ্যমে গত প্রায় ১২ বছর আগে পত্নীতলার ঘোষপাড়া গ্রামের মৃত গোপেন্দ্রনাথ ঘোষের ছেলে গৌতম ঘোষ ও মেয়ে মিতালী রাণী ঘোষের কাছ থেকে ৬০ লাখ টাকায় পাটিচোরা ইউনিয়নের ছালিগ্রাম মৌজায় ৪ দশমিক ৩২ একর জমি ক্রয় করি, যার হাল দাগ নং-১০১৮, সাবেক দাগ-৫৩ এবং জেএল নং-২২৬।
‘ওই জমিতে ১ হাজার ২০০টি বারি-৪ জাতের আমগাছের চারা রোপণ করে ভোগ দখল করে আসছি। আমগাছগুলো বড় হয়ে এখন ফল দেয়া শুরু করেছে। প্রতি বছর ওই জমি থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকার আম বিক্রি করে সাংসারিক খরচ বহনের পাশাপাশি সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘হঠাৎ করে গত ১৫ সেপ্টেম্বর পূর্ব পাটিচোরা গ্রামের নাইম হোসেন এবং তার দুই ভাই লেমন হোসেন ও ছেলিম হোসেনসহ আরও ২০ থেকে ২৫ জন হাঁসুয়া, দা, কুড়াল, লাঠিসোটা নিয়ে বাগানে অনধিকার প্রবেশ করে ৮০০টির বেশি আম গাছ কেটে ফেলে। এতে প্রায় ১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়।
‘এ সময় বর্গাদার আবদুস সামাদ তাদের বাধা প্রদান করলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি ও বিভিন্ন ভয়ভীতি প্রদান করে।’
এ ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমি ঢাকার বাসিন্দা হওয়ায় এবং ব্যবসায়িক কাজে ব্যস্ত থাকায় এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তারা আমার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাসিল করার পাঁয়তারা করছে। এ বিষয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ করা হয়েছে।’
দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান ভুক্তভোগী ব্যবসায়ি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ীর ছেলে শফিউল্লাহ দেওয়ান ও ভাতিজা শোভন শাহরিয়ার।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নাইম হোসেন হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘জমিটি ১৯৯১ সালে আমাদের নামে খারিজ ও পত্তনমূলে আমাদের নামে হোল্ডিং আছে। আমরা ওই জমির মালিক। উনাদের জমিরও দাগও আলাদা।
‘বিষয়টি নিয়ে যেহেতু বিবাদ চলছে, আমরাও থানায় বসতে চেয়েছিলাম, কিন্তু উনি না বসে টালবাহানা করে। আমরা জমির মালিক। তাই আমরা তো দখল নিবই।’
পত্নীতলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ মো. এনায়েতুর রহমান বলেন, ‘আবুল হোসেন নামের একজন ব্যবসায়ী থানায় অভিযোগ করেছিলেন অনেক দিন আগে আমবাগান মালিকানা সমস্যা নিয়ে, তবে কয়েক দিন আগে থানায় এসে তিনি জানান, তার বাগানের গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। পরে পুলিশকে পাঠিয়ে সেটা বন্ধ করা হয়।
‘পরবর্তী সময়ে যতটুকু জেনেছি, তিনি আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন। এখন আদালত থেকে যে নির্দেশনা আসবে, সেটা করা হবে।’