বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নির্বাচনি ব্যবস্থা ও পুলিশে সংস্কারে সহায়তা দেবে জাতিসংঘ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ২০:৫৭

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘বিপ্লব ও পরবর্তী সময়টি গোটা জাতির জন্য সবচেয়ে বেশি ঐক্যের মুহূর্ত। এটি দেশের অর্থনৈতিক সংস্কার এবং প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ঠিক করার একটি দুর্দান্ত সুযোগ। সরকার নির্বাচনি ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কার করতে একটি কমিশন গঠন করেছে, যাতে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়।’

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার ও প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনের উদ্যোগে পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস। তিনি বলেছেন, জাতিসংঘ বাংলাদেশের পুলিশ ও নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার এবং বন্যা পুনর্বাসন ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা করবে।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রোববার তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে জাতিসংঘ প্রতিনিধি এই আশ্বাস দেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এসব তথ্য জানান। তিনি উল্লেখ করেন, বৈঠকে সংস্কার, দুর্নীতি, বন্যা, রোহিঙ্গা সংকট এবং জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিষয় উঠে আসে।

প্রেস সচিব জানান, গোয়েন লুইস অন্তর্বতী সরকার গৃহীত সংস্কার উদ্যোগের প্রতি তার সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং অভ্যুত্থান-পরবর্তী প্রশাসনের প্রধান হিসেবে অসাধারণ ভূমিকা নেয়ায় ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ জানান।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রোববার তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার। ছবি: পিআইডি

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বিপ্লব ও পরবর্তী সময়টি গোটা জাতির জন্য সবচেয়ে বেশি ঐক্যের মুহূর্ত। বর্তমান সরকারের প্রধান কাজ প্রত্যেকের জন্য একটি উদাহরণ স্থাপন করা। এটি দেশের অর্থনৈতিক সংস্কার এবং প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ঠিক করার একটি দুর্দান্ত সুযোগ।’

তিনি উল্লেখ করেন- সরকার একটি সমন্বিত জাতীয় তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা দেশের মানুষের সমস্যা কমিয়ে দেবে এবং দুর্নীতি কমাতে সহায়ক হবে।

ড. ইউনূস বলেন, ‘সরকার নির্বাচনি ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কার করতে একটি কমিশন গঠন করেছে, যাতে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়।’

লুইস বলেন, ‘জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন তদন্ত দল ইতোমধ্যে জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও মারধরের বিষয়ে কাজ শুরু করেছে। ডব্লিউএইচও এবং আইএলওর মতো জাতিসংঘের এজেন্সিগুলো আহতদের সাহায্য করার উপায় খুঁজছে।’

তিনি বলেন, ‘বর্ষার শুরু থেকে বাংলাদেশে প্রায় ১৮ মিলিয়ন মানুষ বন্যার কবলে পড়েছে। জাতিসংঘ বন্যাদুর্গতদের জন্য বিভিন্ন সংস্থা ও দাতব্য সংস্থার সহায়তা সমন্বয় করছে। জাতিসংঘ বাংলাদেশের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলে বন্যা-পরবর্তী পুনর্বাসনে চার মিলিয়ন ডলার দিয়েছে।

অধ্যাপক ইউনূস দক্ষিণ এশিয়ায় বন্যার জন্য একটি আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা চালু করতে জাতিসংঘের সাহায্য চান।

তারা পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা নিয়েও আলোচনা করেন। লুইস তিন পার্বত্য জেলায় জাতিসংঘের সংস্থাগুলো যেসব কাজ করছে তার রূপরেখা তুলে ধরেন।

প্রধান উপদেষ্টা কক্সবাজারের আশ্রয় শিবিরে রোহিঙ্গা শিশুদের একটি উন্নত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্যও জাতিসংঘের সহযোগিতা চান।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রোববার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন ইরানের রাষ্ট্রদূত মনসুর চাভুশিও। ছবি: পিআইডি

ডেনমার্ক ও ইরানের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

ঢাকায় ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার রোববার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন।

অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান এ সময় শ্রম সংস্কার এবং ম্যানগ্রোভ গবেষণায় ডেনিশের সহায়তা চান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকটি সংস্কারের মধ্যে এই দুটি অগ্রাধিকারের শীর্ষে।

বৈঠকে ড. ইউনূস বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আকৃষ্ট করার জন্য শ্রম সংস্কার প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, আইএলও কনভেনশন বাস্তবায়নসহ শ্রম সংস্কার তার সরকারের সংস্কারের একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। এটি শ্রমিক এবং নির্মাতা উভয়ের জন্যই অপরিহার্য ছিল। অধ্যাপক ইউনূস ম্যানগ্রোভ নিয়ে ড্যানিশ-বাংলাদেশ যৌথ গবেষণার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘ম্যানগ্রোভে বিনিয়োগ করা উচিত। এটি দেশকে ঝড় থেকে রক্ষা করে। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে ম্যানগ্রোভ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অপরিহার্য বলে প্রমাণ হয়েছে।’

ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উচ্চ মানের প্রকল্পে তার দেশের ক্রমাগত আগ্রহের উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ডেনমার্কের শিপিং ও পোর্ট জায়ান্ট মারস্ক/এপিএম টার্মিনালের ৪০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ, অফশোর উইন্ড এনার্জি প্রকল্পে ১.৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ এবং ঢাকার সায়েদাবাদ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের জন্য ৩০০ মিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করা হয়েছে।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন এসডিজি বিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক কাজী রাসেল পারভেজ এবং ডেনমার্কের উপ-রাষ্ট্রদূত অ্যান্ডার্স কার্লসেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এদিন সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মনসুর চাভুশিও। প্রধান উপদেষ্টার তেজগাঁও কার্যালয়ে এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বৈশ্বিক ফোরামে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে সমর্থন করার জন্য ইরানকে ধন্যবাদ জানান।

এ বিভাগের আরো খবর