রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় করা বৈদেশিক মুদ্রা আইনের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছে আদালত।
কারাগার থেকে বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয় তাদের।
পরে এ মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার দেখানোসহ সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মো. রাশিদুল হাসান। ওই সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আরিফুর রহমানের আদালত জামিন নাকচ করে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেয়।
এর আগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর নিউ মার্কেট থানার উপপরিদর্শক মো. সজীব মিয়া বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় ওই মামলা করেন।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৩ আগস্ট নৌপথে পালানোর সময় রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে সালমান এফ রহমান ও আনিসুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৪ আগস্ট নিউমার্কেট এলাকায় দোকান কর্মচারী শাহজাহান আলীকে (২৪) হত্যার অভিযোগে করা মামলায় তাদের দুজনের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ।
বৈদেশিক মুদ্রা আইনে করা মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১৩ আগস্ট সন্ধ্যায় বিশ্বস্ত সূত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গোপন সূত্রে জানতে পারে, নিউ মার্কেট থানার হত্যা মামলায় জড়িত আসামি সদরঘাট ২ নম্বর মসজিদ সংলগ্ন স্থানে বিভিন্ন ধরনের বৈদেশিক মুদ্রা অবৈধভাবে নিজ হেফাজতে রেখে লেনদেন করছেন। তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে অভিযানে গেলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামিরা পালানোর চেষ্টা করলে হাতেনাতে আটক হন। পরে তারা তাদের নাম-ঠিকানা জানান।
আটকের পর আসামি আনিসুল হকের কাছে থাকা ব্যাগে ১৭ হাজার ৫৯২ ডলার, ৭২৬ সিঙ্গাপুর ডলার এবং সালমান এফ রহমানের কাছ থেকে ১২ হাজার ৬২৪ ডলার, ৬২০ ফ্রান্সের মুদ্রা, সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাড়ে ৮ হাজার মুদ্রা, ১১ হাজার ৬৫০ সৌদি রিয়াল, ১৫০ পাউন্ড ও ১ হাজার ৩৩২ ইউরো এবং বাংলাদেশি ৫০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
মামলার অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, আসামিদের জব্দকৃত বৈদেশিক মুদ্রার বিষয়ে বৈধ কাগজপত্র দেখাতে বললে তারা কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। জিজ্ঞাসাবাদে তারা পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দেন। আসামিরা জ্ঞাতসারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ও অনুমোদন ছাড়া ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে বৈদেশিক মুদ্রা নিজ হেফাজতে রেখে বৈদেশিক মুদ্রা আইনে অপরাধ করেছেন।