বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন: সালাহউদ্দিন

  • প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম   
  • ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ২০:৩২

জয়নাল আবদীন ফারুক বলেন, ‘রাষ্ট্রের অতি জরুরি কিছু সংস্কার করে দ্রুত নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সংসদ ও সরকার গঠন করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে। উন্নয়ন যেমন গণতন্ত্রের বিকল্প নয়, তেমনই সংস্কারও ভোটের বিকল্প নয়।’

নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন জারি রাখার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।

বিশ্ব গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর আলমাস মোড়ে গণতন্ত্রের শোভাযাত্রা-পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান। কেন্দ্রীয়ভাবে ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই সমাবেশ ও শোভাযাত্রার আয়োজন করে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপি।

সালাহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে শোভাযাত্রাটি আলমাস মোড় হয়ে কাজীর দেউরী, লাভ লেইন, জুবলী রোড, নিউমার্কেট, কোতোয়ালি হয়ে লালদিঘি পাড়ে গিয়ে শেষ হয়।

মঙ্গলবার চট্টগ্রাম নগরীর আলমাস মোড়ে শোভাযাত্রা-পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য দেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। ছবি: নিউজবাংলা

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহর সভাপতিত্বে সমাবেশটি পরিচালনা করেন সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান।

কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূইয়া, জয়নাল আবদীন ফারুক, গোলাম আকবর খোন্দকার, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিভাগীয় শোভাযাত্রার সমন্বয়কারী মাহবুবের রহমান শামীম ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রবর্তন আমরা করেছিলাম। তা হয়েছিল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃত্বে, বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে। সেই কেয়ারটেকার সরকার বিলুপ্ত করে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে নতুনভাবে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদী শাসনের প্রবর্তন করেন।

‘অন্তহীন সংগ্রাম, ত্যাগ-তিতিক্ষা, রক্ত, শ্রম আর প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশের মানুষ পুনরায় স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এই স্বাধীনতা, এই গণতন্ত্রের জন্য যারা যুদ্ধ করেছে, বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য যারা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে, তাদের মধ্যে বাংলাদেশে প্রথম শহীদ রংপুরের সাঈদ। দ্বিতীয় শহীদ চকরিয়ার পেকুয়ার সন্তান, আমার সন্তান ওয়াসিম।’

তিনি বলেন, ‘সব গণতান্ত্রিক সংগ্রামে-আন্দোলনে, যুদ্ধে চট্টগ্রাম সবসময় নেতৃত্ব দিয়েছে। আপনারা যদি মনে করেন যে সবকিছু এমনি এমনি এসেছে, তাহলে এটা ভুল কথা। এই গণঅভ্যুত্থানে, এই গণবিপ্লবে শহীদদের মধ্যে ৪২২ জন বিএনপির নেতাকর্মী। ১১৩ জনের বেশি ছাত্রদলের নেতাকর্মী।

‘এই আন্দোলন সংগ্রামে সাতশ’র বেশি মানুষ গুম-খুনের শিকার হয়েছে, যার মধ্যে ৪২৩ জন শুধু বিএনপির নেতাকর্মী। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামে দুই হাজার ৭০০ মানুষ বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে, বিচারবর্হিভূত হত্যার শিকার হয়েছে। তাদের মধ্যে শত শত মানুষ বিএনপির নেতাকর্মী।

তিনি বলেন, ‘এত রক্ত, এত ঘাম, এত প্রাণ, এত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা অর্জন করেছি বাংলাদেশে নতুন স্বাধীনতা দিবস, বাংলাদেশের নতুন গণতন্ত্র দিবস। বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রকে ছিনিয়ে নিয়ে এসেছে।

‘কিন্তু গণতন্ত্র, এই নতুন স্বাধীনতা, এই বিজয়কে যদি আপনারা অর্থবহ করতে চান, তাহলে ধৈর্য্য ধরতে হবে। আন্দোলন জারি রাখতে হবে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করতে হবে। প্রকৃত গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যতদিন পর্যন্ত একটি রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠিত না হবে, সংসদ প্রতিষ্ঠিত না হবে, ততদিন পর্যন্ত আমরা রাজপথে এই আন্দোলন অব্যাহত রাখবো।’

বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশে গণহত্যাকারীদের আর কোনোদিন জায়গা হবে না। শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের, গণহত্যাকারীদের কোনো রাজনীতি চলবে না। যদি গণহত্যাকারীদের রাজনীতি চলে, তাহলে বাংলাদেশ আবার পরাধীন হবে। কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের এখানে তাঁবেদারি চলবে না।

‘যদি সত্যিকারভাবে স্বাধীন-সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক, বৈষম্যহীন, সাম্যভিত্তিক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে চাইলে শহীদদের রক্তের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমাদের পরস্পরের অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে হবে। কেউ আইনের চেয়ে বড় নন।’

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং উপদেষ্টাবৃন্দকে আহ্বান জানাই, যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনমুখী সংস্কার সাধন করুন এবং গণতান্ত্রিক নির্বাচনের একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করুন।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেন, বিগত ১৭ বছর নির্যাতনের পরও বিএনপিকে স্তব্ধ করতে পারেনি। আগামী ১৭ বছর চেষ্টা করলেও পারবে না। রাত যত গভীর হয় ভোর তত নিকটে আসে।

‘আওয়ামী লীগ মনে করেছিল ভোর বুঝি আর হবে না। কিন্তু সকাল ঠিকই হয়েছে। শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে হয়েছে। হাসিনার মত স্বৈরশাসক ইতিহাসেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে তাই বলে আমাদের নেতাকর্মীদের ছত্রছায়ায় আওয়ামী লীগের কেউ যেন আশ্রয় না পায়। আওয়ামী লীগের নেতাদের অনেক টাকা। তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।’

আবুল খায়ের ভূইয়া বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে বাংলাদেশকে ভঙ্গুর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। নির্বাচনকে নির্বাসনে পাঠিয়ে জবরদস্তির শাসন কায়েম করেছিল। জনগণের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিতদের শাসন ফিরিয়ে আনাই হবে রাষ্ট্রের বড় সংস্কার।’

জয়নাল আবদীন ফারুক বলেন, ‘স্বৈরাচারের পতনের পর গণতন্ত্রের পথে নতুন করে অভিযাত্রা শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রের অতি জরুরি কিছু সংস্কার করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সংসদ ও সরকার গঠন করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে। উন্নয়ন যেমন গণতন্ত্রের বিকল্প নয়, তেমনই সংস্কারও ভোটের বিকল্প নয়।’

এ বিভাগের আরো খবর