ভারতের আধিপত্যবাদী মনোভাবের সমালোচনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘ভারত প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আধিপত্যবাদের রাজনীতি করে যাচ্ছে। প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতি রাজনীতি ও আচরণের কারণগুলো তারা ভালোভাবেই বোঝে।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে সোমবার শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নেতাকর্মীদের নিয়ে শেরেবাংলা নগরে জিয়ার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মির্জা ফখরুল। তারা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান ও এ জেড এম জাহিদ হোসেন, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে- শুধু বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশী অন্যান্য দেশের সঙ্গেও ভারতের সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে।
‘আমার মতে এর প্রধান কারণ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের ধারাবাহিক আধিপত্যের রাজনীতি। এই দৃষ্টিভঙ্গি ভারত বা তার প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য সৌভাগ্য বয়ে আনবে না।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি বিশ্বাস করে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক পারস্পরিক শ্রদ্ধা, মর্যাদা ও অভিন্ন স্বার্থের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা উচিত।’
ভারতের সশস্ত্র বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং শান্তি বজায় রাখতে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রায় ১৬ বছর পর দেশ ফ্যাসিবাদী আওয়ামী শাসক গোষ্ঠীর হাত থেকে মুক্ত হয়েছে। এই বিপ্লবে বহু ছাত্রের পাশাপাশি নারী ও শিশু তাদের জীবন উৎসর্গ করেছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এই আন্দোলনে নারীর অবদান কেউ অস্বীকার করতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘আজকের এই দিনে অর্জিত স্বাধীনতা সুসংহত করা, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং দেশে আইনের শাসন ও জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠায় আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত রাখার শপথ নিয়েছি।
‘একইসঙ্গে আশা প্রকাশ করছি- অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দুবার সাক্ষাৎ করেছি। সংস্কার প্রস্তাবগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরা এবং একটি সময়সীমা নির্ধারণের অনুরোধ করেছি, যাতে সুনির্দিষ্ট ও যুক্তিসঙ্গত সময়সীমার মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করা যায়।’