ট্রাক শ্রমিক খোকন হত্যার ঘটনায় নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগের ৫৩ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।
নিহত শ্রমিকের পিতা মজিবুল হক রোববার সুধারাম মডেল থানায় এই মামলার এজাহার দায়ের করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, নিহত খোকন পেশায় একজন ট্রাকশ্রমিক ছিলেন। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি-জামায়াত সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা বিএনপি ও জামায়াতের কর্মী-সমর্থকরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করার জন্য সদর উপজেলার দত্তেরহাট দত্ত বাড়ির মোড়ে জমায়েত হন।
খোকন তখন দত্তেরহাট শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। একপর্যায়ে তিনি সোনাপুর-মাইজদীর প্রধান সড়কে গেলে সাবেক এমপি একরামুল, সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শামছুদ্দিন জেহান, সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াদুদ পিন্টু, নোয়াখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র শহীদ উল্যাহ খান সোহেল, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন, আওয়ামী লীগ নেতা সিএনজি কামাল, পৌর কাউন্সিলর নাসিম উদ্দিন সুনাম, আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল ইসলামসহ অন্য আসামিরা বিএনপি-জামায়াতের শান্তিপূর্ণ মিছিলে হত্যার উদ্দেশ্যে অতর্কিত হামলা করেন। তখন ১ থেকে ২০ নং আসামিরা তাদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র থেকে এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়তে থাকলে খোকন গুলিবিদ্ধ হন।
মামলায় আরও বলা হয়েছে, খবর পেয়ে নিহতের বাবা ঘটনাস্থলে গেলে আসামিরা তাকে মারধর করে তার ছেলেকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। এরপর তাকে মৃত ভেবে লাশ গুম করার জন্য ময়লাযুক্ত খালে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করেন। পরে তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় সুধারাম থানায় মামলা করতে গেলে আসামিদের রাজনৈতিক প্রভাবে পুলিশ নিহতের পিতার মামলা না নিয়ে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। পরবর্তীতে পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে চূড়ান্ত রিপোর্ট দেয়।
মামলার বাদী অভিযোগ করেন, এ কারণে তিনি তার ছেলে হত্যার বিচার পাননি।
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, ‘মামলার এজাহার হাতে পেয়েছি। তবে বর্তমানে সার্ভার চালু নেই। সার্ভার চালু হলেই মামলা রেকর্ড করা হবে। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।’