মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন পেয়েছে। দলটির প্রতীক ‘কেটলি’। এছাড়াও নিবন্ধন পেয়েছে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদ। এই দলটির প্রতীক ‘ট্রাক’।
সোমবার নির্বাচন কমিশন সচিব শফিউল আজিম স্বাক্ষরিত পৃথক প্রজ্ঞাপনে দল দুটিকে নিবন্ধন দেয়ার কথা জানানো হয়।
এ দুটি দল নিয়ে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা দাঁড়াল ৪৭।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী প্রধান কার্যালয় ২২/১, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০-এ অবস্থিত নাগরিক ঐক্যকে পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন করেছে। এই দলের জন্য কেটলি প্রতীক সংরক্ষণ করা হয়েছে। নিবন্ধন নম্বর ৫২।
অপর প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী প্রধান কার্যালয় আল রাজী কমপ্লেক্স (তৃতীয় তলা), বিজয়নগর, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০ এ অবস্থিত ‘গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি)’-কে পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন করেছে। উক্ত দলের জন্য ‘ট্রাক’ প্রতীক সংরক্ষণ করা হয়েছে। নিবন্ধন নম্বর ০১।
ইসিতে রেজা কিবরিয়াপন্থীদের হট্টগোল
এদিকে নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি) নিবন্ধন পাওয়ার পর সোমবার নির্বাচন কমিশনে (ইসি) এসে রেজা কিবরিয়ার নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদের নেতারা হট্টগোল করেন। বিষয়টি নিয়ে ইসি সচিবের দপ্তরের বাইরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন। নির্বাচন ভবনে দায়িত্বরত সেনা সদস্যরা পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
সোমবার দুপুরে নুরের দল নিবন্ধন পাওয়ার ঘণ্টা দেড়েক পরই গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে বেশকিছু নেতাকর্মী নির্বাচন ভবনে আসেন। তারা ইসি সচিবের দপ্তরেও প্রবেশ করেন। সেখানে অযৌক্তিকভাবে আজকের মধ্যেই তাদের দলকে নিবন্ধন দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন, যে ঘটনাকে ‘সীমা অতিক্রম’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন ইসি সচিব শফিউল আজিম।
তিনি বলেন, ‘ঠিক অবরুদ্ধ নয়, তারা অনেকটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছেন। একজনের আচরণ লিমিট ক্রস করেছে। বিষয়টি আমরা সরকারকেও জানিয়েছি। এভাবে তো হয় না। আমরা বলেছি একটা প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে যেতে হবে। সেই প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু সেটা তারা মানতে নারাজ।’
প্রসঙ্গত, নুরুল হক নুর ও তার সমমনারা ২০২১ সালে গণঅধিকার পরিষদ গঠন করেন। এতে আহ্বায়ক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন রেজা কিবরিয়া। তবে ২০২৩ সালের জুনে এসে দলটি ভাগ হয়ে যায়।
ইতোমধ্যে দু’পক্ষ নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের আবেদনও করেছে। সেই প্রক্রিয়ার মধ্যেই দুই শীর্ষ নেতা নুর ও রেজা পরস্পরকে বহিষ্কার করেন। এতে দলটির নেতৃত্ব ও কার্যালয় নিয়ে প্রশ্ন উঠলে নিবন্ধন তালিকা থেকে শেষ পর্যায়ে এসে বাদ পড়ে গণঅধিকার পরিষদ।
এরপর কাউন্সিল করে নুরের অংশ কমিটি গঠন করে ইসিতে নথি জমা দেয়। দু’দফা পুনর্বিবিচেনার আবেদন করে অবশেষে সোমবার নিবন্ধন পায় গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি)। আর সেই খবর রটে যাওয়ার পরই ইসিতে আসে রেজা কিবরিয়া নেতৃত্বাধীন অংশটি।