বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিজিবি স্থানীয়দের বাধায় ফেনীতে বাঁধ কাটতে পারেনি বিএসএফ

  • প্রতিনিধি, ফেনী   
  • ২৮ আগস্ট, ২০২৪ ১২:৫৭

বিজিবির ফেনী ব্যাটালিয়ন (৪ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, ‘ওই এলাকায় সীমান্তের শূন্যরেখায় ভারতের অংশে বাঁধ কাটার চেষ্টা করা হয়েছিল। পরে বিজিবি সদস্যরা গিয়ে সেখানে বাঁশি বাজিয়ে সতর্ক করলে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসেন। স্থানীয় বাসিন্দারা বাংলাদেশ অংশ থেকে শোর চিৎকার করে বাধা দেন। তখন বিএসএফ উক্ত স্থান থেকে সরে যায়।’

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ফেনীর পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের নিজ কালিকাপুর সীমান্তের শূন্যরেখায় বল্লামুখা বাঁধ কেটে দেয়ার চেষ্টা করেছিল বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

বাহিনীটির দাবি, তাদের সদস্য ও স্থানীয়দের বাধার মুখে বিএসএফের বাঁধ কাটার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।

বিজিবির ফেনী ব্যাটালিয়নের (৪ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বুধবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

স্থানীয় ও বিজিবির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবারের বর্ষা মৌসুমের শুরুতে পাহাড়ি ঢলের চাপে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিলোনিয়া শহর প্লাবিত হয়। ভারি বর্ষণে স্রোতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেলে বল্লামুখা খালের মুখে ভারতীয় অংশে বিএসএফ সদস্যদের সহযোগিতায় বাঁধ কেটে দেন ভারতীয়রা। এতে বাংলাদেশ অংশে সিলোনিয়া নদীর পানি বেড়ে পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলায় অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়।

একপর্যায়ে বিএসএফ বাংলাদেশ অংশে বাঁধটিও কেটে দেয়ার জোর চেষ্টা চালায়, তবে বিজিবি ও স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধার মুখে সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়।

বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ও নেটওয়ার্ক না থাকায় বিষয়টি এতদিন জানাজানি হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর এ নিয়ে স্থানীয় জনগণের মধ্যে আলাপ-আলোচনার ঝড় উঠে।

এ বিষয়ে স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, গত ২০ আগস্ট সকালে বিভিন্ন মসজিদে মাইকিং করে বল্লামুখা খালের বাঁধের ব্যাপারে গ্রামবাসীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়। ওই দিন রাত আটটার দিকে বাংলাদেশ অংশের বাঁধ কাটতে চেষ্টা করে বিএসএফ। তাদের সহযোগিতায় ভারতীয় নাগরিকরাও এগিয়ে আসেন। বাঁধে অবস্থান নেয়া বাংলাদেশি বাসিন্দাদের ছত্রভঙ্গ করতে বিএসএফ কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

ওই দিন গ্রামবাসীর সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন নিজ কালিকাপুর বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা। তাদের বাধার মুখে খালের বাংলাদেশ অংশের বাঁধটি কাটতে পারেনি ভারতীয়রা। এতে বন্যায় আরও ভয়াবহ দুর্ভোগের হাত রক্ষা পেয়েছে মির্জানগর ইউনিয়নসহ পরশুরামের নিম্নাঞ্চল।

নিজ কালিকাপুরের বর্ষীয়ান বাসিন্দা ইউনুছ মিয়া বলেন, ‘বাঁধটি কেটে দেয়া হলে মির্জানগর ইউনিয়নসহ পরশুরামে আরও বেশি পানি প্রবেশ করত।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৯৮৩ সালের বন্যার সময়ও এ বাঁধটি কেটে দেয়ায় পরশুরাম ও ফুলগাজীতে বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।’

নিজ কালিকাপুর বিজিবি ক্যাম্পের নায়েক রুম্মান শরীফ বলেন, ‘বাঁধটি যেন কোনোভাবে কাটতে না পারে, সে জন্য আমরা গ্রামবাসীর সঙ্গে সেদিন বাঁধের ওপরে অবস্থান নিয়েছিলাম। এই ব্যাপারে আমাদের সবসময় সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে।’

বিজিবির ফেনী ব্যাটালিয়ন (৪ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, ‘ওই এলাকায় সীমান্তের শূন্যরেখায় ভারতের অংশে বাঁধ কাটার চেষ্টা করা হয়েছিল। পরে বিজিবি সদস্যরা গিয়ে সেখানে বাঁশি বাজিয়ে সতর্ক করলে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসেন।

‘স্থানীয় বাসিন্দারা বাংলাদেশ অংশ থেকে শোর চিৎকার করে বাধা দেন। তখন বিএসএফ উক্ত স্থান থেকে সরে যায়।’

বিজিবির ফেনী ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক বিএসএফ কর্তৃক ফাঁকা গুলি ছোঁড়ার বিষয়টি জানেন না বলে জানান।

পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের নিজ কালিকাপুরে ভারত সীমান্তে মুহুরী নদীসংলগ্ন চরের পশ্চিম-দক্ষিণে রয়েছে একটি মরা নদী। সেটি বল্লামুখা খাল নামে পরিচিত।

বল্লামুখা খাল নিজ কালিকাপুর থেকে শুরু হয়ে রাঙ্গামাটিয়া, ফকিরের খিল, উত্তর কাউতলী, বাইন্যা গ্রাম, ডিএম সাহেবনগর, মেলাঘর, মির্জানগর, গদানগর, পূর্ব সাহেবনগর, কালীকৃষ্ণনগর গ্রাম দিয়ে সিলোনিয়া নদীতে মিলিত হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর