নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে রূপসী এলাকায় গাজী টায়ার কারখানায় লাগা আগুন ২২ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট টানা চেষ্টা চালিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দফতরের পরিচালক (প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও উন্নতি) লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল করিম জানান, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।
সাবেক সংসদ সদস্য গাজী গোলাম দস্তগীরের মালিকানাধীন গাজী টায়ার উৎপাদন কারখানার ছয়তলা ভবনে রোববার রাত ৯টার দিকে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল করিম জানান, মোট ১২০ জন দমকল কর্মী আগুন নেভানোর কাজে নিয়োজিত রয়েছেন এবং কারখানা থেকে ১৪ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।
এদিকে স্থানীয়দের দাবি, সাবেক এমপি গাজী গোলাম দস্তগীরকে ছয় দিনের রিমান্ডে পাঠানোর খবর শুনে এলাকায় আনন্দ মিছিল বের হয়। রূপসী এলাকায় মিছিল বের করে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন।
একপর্যায়ে মিছিলে অংশ নেয়া একদল লোক কারখানায় ঢুকে যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে যায়।
রাত ৯টার দিকে কারখানার নিচতলায় আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।
এদিকে এই টায়ার কারাখানায় আগুনের ঘটনায় শতাধিক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন বলে খবর পাওয়া যায়।
সোমবার বিকেল ৪টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বরত ফিমেল ফায়ার ফাইটার কাকলি খাতুন।
কারখানা কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, একাধিক গ্রুপ কারখানায় ঢুকে লুটপাট করে অবশেষে আগুন ধরিয়ে দেয়। এর পর পরই সেখান থেকে শতাধিক মানুষ নিখোঁজ হওয়ার খবর আসে। তাদের কেউ কারখানার শ্রমিক নন। কারখানায় হামলা চালিয়ে লুটপাট কিংবা অন্য কোনো কাজে তারা এসেছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে দুপুরের দিকে কারখানার সামনে নিখোঁজদের স্বজনরা ভিড় জমাতে থাকেন। তখন ফায়ার সার্ভিস নিখোঁজের তালিকা তৈরির উদ্যোগ নেয়। বেলা পৌনে ৩টা পর্যন্ত ১৭৩ জন নিখোঁজের তালিকা করেছে ফায়ার সার্ভিস।
এ বিষয়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল করিম বলেন, স্বজনদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক এই তালিকা করা হচ্ছে। তালিকা করার পর তা পুলিশকে দেয়া হবে। পুলিশ তদন্ত করে এ বিষয়ে চূড়ান্ত তথ্য জানাবে।
তিনি আরও বলেন, আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসার পর তারা ভবনের ভেতরে যাবেন। তখন বোঝা যাবে, কেউ পুড়ে মারা গেছেন কি না।