বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব ও পূর্বাঞ্চলের ১১ জেলা ভয়াবহভাবে বন্যাকবলিত। এমনই পরিস্থিতিতে এবার ফারাক্কা ব্যারাজের ১০৯টি গেটের সব ক'টি খুলে দেয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ খবর সত্যি হলে ভাটিতে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
ভারতের মিডিয়ায় দাবি করা হয়েছে, প্রবল বৃষ্টির কারণে ভারতের বিহার ও ঝাড়খণ্ড রাজ্যে বন্যা ও পানির চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাধ্য হয়েই সোমবার ফারাক্কা বাঁধের সব গেট খুলে দেয়া হয়েছে। উজানে বন্যা পরিস্থিতি ও পাহাড়ি ঢলের বিষয়ে আগে থেকেই বাংলাদেশকে সব তথ্য দেয়া হচ্ছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি সূত্র জানায়, গতকাল রোববার পর্যন্ত ফারাক্কার ২৭টি গেট খোলা ছিল। গণমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে যে আজ সোমবার ১০৯টি গেটের সবই খুলে দেয়া হয়েছে। এভাবে হঠাৎ এতগুলো গেট খুলে দিলে রাজশাহীসহ দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, পদ্মার পানি এখনও বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্প সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতের সংবাদমাধ্যম বলছে, বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বিপুল বৃষ্টি হওয়ায় ফারাক্কা বাঁধ প্রকল্পের জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কারণে পানির চাপ সামলাতে ফারাক্কা বাঁধের সব দরজা খুলে দেয়া হয়েছে। ফলে একদিনে বাংলাদেশে ১১ লাখ কিউসেক পানি প্রবেশ করবে।
ফারাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ সোমবার জানায়, ভারতের প্রতিবেশী দুই রাজ্য বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বন্যার জেরে পানির চাপ পড়েছে। তবে স্বস্তির বিষয়, এখনও নেপাল থেকে পাহাড়ি ঢল নামেনি। ফারাক্কা ব্যারাজ এলাকায় পানি বিপৎসীমার অনেকটা উপর দিয়ে বইছে। পানি না ছাড়লে বাঁধের মারাত্মক ক্ষতি হতো। এ কারণে বাধ্য হয়েই বাঁধের গেটগুলো খুলে দিতে হয়েছে। সেক্ষেত্রে ফিডার ক্যানেলেও পানির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।
ফারাক্কা ব্যারাজের জেনারেল ম্যানেজার আর দেশ পাণ্ডে বলেন, ‘ফারাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ সবসময় এলার্ট রয়েছে। প্রতিমুহূর্তে নজর রাখা হচ্ছে। খুব কম সময়ের মধ্যে যেভাবে পানির চাপ তৈরি হয়েছে তাতে ১০৯ গেটের সবক’টি খুলে না দিলে ব্যারাজের ওপর বড় চাপ তৈরি হচ্ছিল। বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারত। আপাতত ফিডার ক্যানেলে ৪০ হাজার কিউসেক ও ডাউন স্ট্রিমে ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে।’