বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন। আমরা আশা করেছিলাম তিনি একটি রোডম্যাপ দেবেন। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার মুখ থেকে সেটা শুনতে পাইনি।’
জাতীয় প্রেসক্লাবে সোমবার এক স্মরণ সভায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদের নবম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই স্মরণ সভার আয়োজন করে জাতীয় পার্টি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা এতদিন চিন্তিত ছিলাম প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে কোনো কিছু শুনতে পাচ্ছি না বলে। কালকে উনি কথা বলেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- তিনি বলেছেন কবে নির্বাচন হবে সেটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।
‘তবে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করতে হবে। আমি আশা করব, প্রধান উপদেষ্টা সে প্রক্রিয়ায় যাবেন। তিনি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলবেন।’
ফখরুল বলেন, ‘প্রশাসনে আমরা সেসব ব্যক্তিকে দেখতে পাচ্ছি যারা ফ্যাসিবাদী সরকারকে মদদ দিয়েছে, সাহায্য করেছে। এই হত্যার সঙ্গে জড়িতদের চেহারা আর দেখতে চাই না। দয়া করে অতি দ্রুত এদের অপসারণ করে যারা দেশপ্রেমিক, যারা কাজ করতে চায়, যাদের বঞ্চিত করা হয়েছে তাদের সুযোগ করে দিন। না হলে এটার জন্য জাতি আপনাদের ক্ষমা করবে না।’
আনসার সদস্যদের আন্দোলন প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গতকাল সচিবালয় ঘেরাও করে আনসার সদস্যদের পোশাক ব্যবহার একটা গোলযোগ সৃষ্টি করা হয়েছিলো। ছাত্ররা সেটা নস্যাৎ করে দিয়েছে। এটা কিন্তু অশনি সংকেত। অর্থাৎ পরাজিত শক্তি বিভিন্নভাবে এই বিজয়কে নস্যাৎ করতে চাইছে। আমরা জনগণকে আহ্বান জানাবো এ বিষয়গুলোকে প্রশ্রয় না দেয়ার জন্য।’
দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আন্দোলন নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যখন ফ্যাসিবাদ ছিলো, তখন দাঁড়ানোর চিন্তাও করতে পারতেন না। এখন সুযোগ এসেছে। সময় দিন নতুন সরকারকে, তারা নিশ্চয় এই বিষয়গুলো দেখবে এবং সেভাবে কাজ করবে। কিন্তু এভাবে ঘেরাও করে বাধ্য করে কোনো কিছু আদায় করা, জনগণ সেটা ভালোভাবে দেখবে না।
‘আমাদেরকে ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে। যে সরকার এসেছে তারা অবশ্যই কাজ করার জন্য এসেছে। তাদেরকে সে সুযোগ দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা একটা ক্রান্তিকালে আছি। ছাত্র-জনতার সফল বিপ্লবের পর একটি অন্তবর্তীকালীন সরকার এসেছে। আমাদের এই সরকারের প্রতি আস্থা আছে। এই সরকারের প্রধান সারাবিশ্বের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদকে স্মরণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি আমার ছাত্রজীবনে কাজী জাফর আহম্মেদের নাম শুনেছি। আমরা যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি তখন জাফর ভাই জেলে ছিলেন। একদিন তিনি জেল থেকে বের হলে তার এক বক্তৃতা শুনে আমরা অবাক হয়ে গেছি। তার বক্তৃতা শুনে অনেকে ছাত্র রাজনীতিতে যোগ দিয়েছে।’
স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দার।