ফেনী ও কুমিল্লা জেলায় বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত রয়েছে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলে চলমান বন্যায় ১১ জেলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ জন। আর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫৭ লাখের বেশি মানুষ। পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে ১২ লাখের বেশি পরিবার।
বন্যা পরিস্থিতির সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরতে সোমবার মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান।
তিনি জানান, বন্যা আক্রান্ত জেলার সংখ্যা ১১টি। সেগুলো হলো- ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার।
আক্রান্ত জেলাগুলোর ৭৪টি উপজেলার মোট ১২ লাখ ৩৮ হাজার ৪৮টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত লোকের ৫৭ লাখ ১ হাজার ২০৪ জন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানায়, বন্যাদুর্গত নোয়াখালী ও খাগড়াছড়ি জেলায় আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে নোয়াখালীতে দুজন ও খাগড়াছড়িতে একজন মারা গেছেন। এ নিয়ে চলতি বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ জন।
এ পর্যন্ত কুমিল্লায় ছয়জন, চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীতে পাঁচজন করে, কক্সবাজারে তিনজন এবং ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, খাগড়াছড়ি ও লক্ষ্মীপুরে একজন করে মারা গেছেন। এছাড়া মৌলভীবাজারে দুজন নিখোঁজ রয়েছেন।
ইতোমধ্যে তিন হাজার ৮৩৪টি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন চার লাখ ৬৯ হাজার ৫২৩ জন। এছাড়া ২৮ হাজার ৯০৭টি গৃহপালিত পশু রাখা হয়েছে সেসব আশ্রয় কেন্দ্রে।
বন্যাকবলিত জেলাগুলোতে নগদ তিন কোটি ৫২ লাখ টাকা, ২০ হাজার ৬৫০ টন চাল, ১৫ হাজার শুকনো খাবার বা অন্যান্য খাবারের প্যাকেট এবং শিশুখাদ্য ও পশুখাদ্যে ৩৫ লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
বন্যাকবলিত এলাকায় মোট ৬৪৫টি মেডিক্যাল টিম চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ফেনী জেলায় মোবাইল ও টেলিযোগাযোগ সেবা পুনরায় চালু করা হয়েছে। এছাড়াও ফিল্ড হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ মানুষের দেয়া ত্রাণসামগ্রী বিতরণ চলছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, মেডিক্যাল টিম ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।