বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ জনগণের হাতে: প্রধান উপদেষ্টা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ২৫ আগস্ট, ২০২৪ ২০:২৩

জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আগামী নির্বাচন কখন অনুষ্ঠিত হবে সে সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের নয়, বরং সেটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। দেশের সংকটকালে আমরা ছাত্রদের আহ্বানে এসেছি। দেশের আপামর জনসাধারণ আমাদের নিয়োগ সমর্থন করেছেন। তারা যখন বলবেন আমরা চলে যাব।’

আগামী নির্বাচন কখন অনুষ্ঠিত হবে সে সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের নয়, বরং সেটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, ‘দেশবাসীকে ঠিক করতে হবে তারা কখন আমাদের ছেড়ে দেবেন।’

রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে এসব কথা বলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি বলেন, ‘দেশের সংকটকালে আমরা ছাত্রদের আহ্বানে এসেছি। তারা আমাদের প্রাথমিক নিয়োগকর্তা। দেশের আপামর জনসাধারণ আমাদের নিয়োগ সমর্থন করেছেন। আমরা ক্রমাগতভাবে সবাইকে বিষয়টি স্মরণ করিয়ে যাব, যাতে হঠাৎ করে এই প্রশ্ন উত্থাপিত না হয় যে আমরা কখন যাব। তারা যখন বলবে আমরা চলে যাব। ছাত্রদের আহ্বানে আমরা সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেছি।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘একটা বিষয়ে সবাই জানতে আগ্রহী, কখন আমাদের সরকার বিদায় নেবে। এটার জবাব আপনাদের হাতে, কখন আপনারা আমাদেরকে বিদায় দেবেন।

‘আমরা কেউ দেশ শাসনের মানুষ নই। আমাদের নিজ নিজ পেশায় আমরা আনন্দ পাই। আমাদের উপদেষ্টামণ্ডলীও এই লক্ষ্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে সবাই মিলে একটা টিম হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা সংস্কারের অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশনকেও সংস্কার করব। কমিশনকে যে কোনো সময় আদর্শ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত রাখব। পুলিশে সংস্কারের জন্য একটি কমিশন করব। বিচার বিভাগ, শিক্ষা খাত এবং স্বাস্থ্য খাতে সংস্কার আনব।’

জাতির উদ্দেশে ভাষণে ড. ইউনূস বলেন, ‘একটা বিশেষ ব্যাপারে আমরা আপনাদের সহযোগিতা চাচ্ছি। আমাদের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে প্রতিদিন সচিবালয়ে, আমার অফিসের আশপাশে, শহরের বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ করা হচ্ছে।

‘গত ১৬ বছরের অনেক দুঃখ-কষ্ট আপনাদের জমা আছে। সেটা আমরা বুঝি। আমাদের যদি কাজ করতে না দেন তাহলে এই দুঃখ ঘুচানোর সব পথ বন্ধ হয়ে থাকবে। আপনাদের কাছে অনুরোধ- আমাদের কাজ করতে দিন। আপনাদের যা চাওয়া তা লিখিতভাবে আমাদের দিয়ে যান। আমরা আপনাদের বিপক্ষ দল নই। আইনসংগতভাবে যা কিছু করার আছে আমরা অবশ্যই তা করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ঘেরাও করে আমাদের কাজে বাধা দেবেন না। সবাই মিলে তাদের বুঝান তারা যেন এ সময়ে তাদের অভিযোগের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আমাদের দৈনন্দিন গুরুত্বপূর্ণ কাজে বাধা না দেন।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা অনুধাবন করছি, আমাদের কাছে আপনাদের প্রত্যাশা অনেক। এ প্রত্যাশা পূরণে আমরা বদ্ধপরিকর। যদিও দীর্ঘদিনের গণতন্ত্রহীনতা, ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমাদের জন্য পর্বতসম চ্যালেঞ্জ রেখে গেছে। কিন্তু এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণে আমরা প্রস্তুত। আজ আমি সরকারের পক্ষ থেকে আপনাদের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করতে আপনাদের সামনে এসেছি।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘রাতারাতি এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ কঠিন। নড়বড়ে এক কাঠামো, আমি বরং বলবো জনস্বার্থের বিপরীতমুখী এক কাঠামোর ওপর দাঁড়িয়ে আমাদেরকে দেশ পুনর্গঠনের কাজে হাত দিতে হয়েছে।

‘আমরা এখান থেকেই বাংলাদেশকে এমনভাবে গড়তে চাই যেন এ দেশে জনগণই সত্যিকার অর্থে সব ক্ষমতার উৎস হয়। বিশ্ব দরবারে একটি মানবিক ও কল্যাণকর রাষ্ট্র হিসেবে সমাদৃত হয়। তরুণ প্রজন্ম, শিক্ষার্থী ও জনতার আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানাতে রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে সফল আমাদেরকে হতেই হবে। এর আর কোনো বিকল্প নেই।’

অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান জনগণকে ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এখনই সব দাবি পূরণ করার জন্য জোর করা, প্রতিষ্ঠানে ঢুকে ব্যক্তিবিশেষকে হুমকির মধ্যে ফেলা, মামলা গ্রহণের জন্য চাপ সৃষ্টি করা, বিচারের জন্য গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে আদালতে হামলা করে আগেই এক ধরনের বিচার করে ফেলার যে প্রবণতা তা থেকে বের হতে হবে। ছাত্র-জনতার বিপ্লবের গৌরব ও সম্ভাবনা এসব কাজে ম্লান হয়ে যাবে, নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রচেষ্টাও এতে ব্যাহত হবে।’

জুলাই গণহত্যা স্মৃতি ফাউন্ডেশন গঠন হচ্ছে বলে ভাষণে জানান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, ‘জুলাই গণহত্যা স্মৃতি ফাউন্ডেশন গঠনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। দেশ-বিদেশের সবাইকে এ ফাউন্ডেশনে অনুদানের অনুরোধ জানাচ্ছি। আমি নিজে এ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েছি।’

এ বিভাগের আরো খবর