দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলে চলমান বন্যায় ১১ জেলার ৭৭টি উপজেলার ৪৪ লাখ ৯৭ হাজার ৫৩৫ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যা উপদ্রুত জেলাগুলো হলো- ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার।
আকষ্মিক এই বন্যায় শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দুই নারীসহ ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান শুক্রবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দেশের চলমান বন্যা নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বন্যায় দেশের ৫৮৪টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার আট লাখ ৮৭ হাজার ৬২৯টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪৪ লাখ ৯৭ হাজার ৫৩৫ জন।
বন্যায় কুমিল্লায় চারজন, ফেনীতে একজন, চট্টগ্রামে দুজন, নোয়াখালীতে একজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন, লক্ষ্মীপুরে একজন ও কক্সবাজারে তিনজন মারা গেছেন।
সচিব বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধার ও তাদের মাঝে পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয়দানের জন্য মোট তিন হাজার ১৬০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ইতোমধ্যে এক লাখ ৮৮ হাজার ৭৩৯ জন লোক ও ১৭ হাজার ৮৪৮টি গবাদি পশু আশ্রয় দেয়া হয়েছে। এছাড়া ১১ জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য মোট ৬৩৭টি মেডিক্যাল টিম চালু রয়েছে।
কামরুল হাসান জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণের জন্য দুর্গত বিভিন্ন জেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে তিন কোটি ৫২ লাখ নগদ টাকা, ২০ হাজার ১৫০ টন চাল এবং ১৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া দেশের সব জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুদ রয়েছে।
বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলোর জেলা প্রশাসকদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, মেডিক্যাল টিম ও অন্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে একসঙ্গে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। তথ্য ও সহযোগিতার জন্য ০২-৫৫১০১১১৫ নম্বর চালু রয়েছে।
ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, হবিগঞ্জ ও লক্ষ্মীপুর জেলার বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও বিজিবি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে উদ্ধার কাজে নিয়োজিত রয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং সচিব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য বন্যা উপদ্রুত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন।