চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি ও হাটহাজারীর সীমান্তবর্তী নাজিরহাট পুরাতন ব্রিজ এলাকায় হালদা নদীর বাঁধ ভেঙে গেছে, যার ফলে নাজিরহাট, মন্দাকিনী ফরহাদাবাদ ও সুয়াবিল এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোজাম্মেল হক চৌধুরী বৃহস্পতিবার রাত একটার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার রাতেই ফটিকছড়ির ২২টি ইউনিয়নের সব গ্রাম প্লাবিত হয়। বৃহস্পতিবার রাতে বেঁড়িবাধ ভেঙে পানি প্রবেশ করে হাটহাজারীর ফরহাদাবাদের ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকায়।
ধুরং ও হালদা নদীতে পানির চাপ বাড়ায় অন্তত ১৬টি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে যায় উল্লেখ করে স্থানীয়রা জানান, হাটহাজারীর বেশির ভাগ গ্রামীণ সড়ক পানিতে ডুবে যায়। ঘরবাড়িতে হাঁটু থেকে কোমর সমান পানি। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় ফসলি জমির।
বন্যার কারণে ফটিকছড়ি থেকে হেঁয়াকো রামগড় সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যায়। পানিতে নিমজ্জিত উপজেলার মাইজভান্ডার-রাউজান সড়কও।
স্থানীয়রা জানান, ফটিকছড়ির সুন্দরপুর, ভুজপুর, বাগানবাজার ও পাইন্দং এলাকার অবস্থার বেশি অবনিত হয়েছে। এ মুহূর্তে নাজিরহাটে হালদার পানি চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের ওপর দিয়ে গড়াচ্ছে।
কানাডাপ্রবাসী ব্যবসায়ী মনজুর চৌধুরী জানান, তাদের গ্রাম মন্দাকিনী পানির নিচে। মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছে। অবর্ণনীয় দুর্দশায় পড়েছেন মানুষ।
যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী আমিন উল্লাহ বাহার চৌধুরী জানান, বাঁধ ভেঙে তাদের বাড়িঘর তলিয়ে যায়। কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি। প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।
ফটিকছড়ির ইউএনও মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, ফটিকছড়ি দিয়ে প্রবাহিত হালদা নদী ও বেশ কিছু খালের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে লোকালয়ে প্রবেশ করে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়ে লাখো মানুষ।
তিনি বলেন, ‘আমরা ১৮টি ইউনিয়নের জন্য ১৮ জন কর্মকর্তা নিয়োগ করেছি। তারা সার্বিক পরিস্থিতির খোঁজ আমাদের জানাচ্ছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় পরিস্থিতি মনিটর করছে।
‘ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় লোকজনকে আশ্রয় দিতে আমরা ৩৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করছি।’
এ পরিস্থিতিতে বন্যাদুর্গতদের ইউএনওর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর (০১৭৩৩৩৩৪৩৪৮), সেনাবাহিনীর উদ্ধারকারী দলের প্রধানের নম্বর (০১৭৬৯০০৯৫৯৭) এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ তথা বিজিবির উদ্ধারকারী দলের প্রধানের নম্বরে (০১৬৬৯৬০১৪৩১) যোগাযোগের আহ্বান জানানো হয়েছে।