টানা তিন দিন বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ধলাই নদীর চারটি স্থানে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।
বন্যায় উপজেলার ১৪৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন, যাদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উজানে ভারতীয় পাহাড়ি এলাকায় ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ায় সোমবার রাত থেকেই নদীর পানি বাড়তে শুরু করে। এর ফলে পাহাড়ি ছড়ার পানি উপচে ধলাই নদীতে পড়তে শুরু করে।
ধলাই নদীর পানি সোমবার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বিকেল থেকে বাঁধে ভাঙন শুরু হয়। নদীর চারটি স্থানে ভাঙন দেখা দেয়ায় ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়।
উপজেলার আদমপুর, ইসলামপুর, মাধবপুর, সদর, আলীনগর, শমশেরনগর, পতনঊষার, মুন্সিবাজার, রহিমপুর ও পৌরসভার অধীন বিভিন্ন অঞ্চল প্লাবিত হয়।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, শমশেরনগরে ২০টি গ্রাম, মুন্সিবাজারে ২৬টি গ্রাম, পতনঊষারে ১৬টি, আলীনগরে ১৬টি, ইসলামপুরে ২০টি, আদমপুরে ২০টি, রহিমপুর, সদর ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার আরও প্রায় ২৫টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়। এসব এলাকার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন।
বানের জলে বিভিন্ন স্থানে রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। কৃষকদের রোপিত বিস্তীর্ণ আমন ক্ষেত ও শাকসবজি নিমজ্জিত হয়।
কিছু কিছু স্থানে শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
উপজেলার নিম্নাঞ্চলীয় শমশেরনগর, মুন্সিবাজার ও পতনঊষার ইউনিয়নে বন্যার অবনতি হচ্ছে। ফলে পুকুর ও মৎস্য খামার থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে মাছ। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাষিরা।
এমন বাস্তবতায় কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এলাকায় প্রয়োজনীয় আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
‘বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সার্বক্ষণিক নজরদারি রয়েছে। বরাদ্দ এসেছে। জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে শুকনো খাবার বিতরণও শুরু হয়েছে।’