গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নূর আলম নামে এক যুবক নিহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকসহ ১৩৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সূত্র: বাসস
মঙ্গলবার রাতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন এলাকার বাসন থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। মামলার বাদী নিহত নূর আলমের পিতা মো. আমির আলী। তার বাড়ি কুড়িগ্রাম সদরের মোল্লাপাড়া মধ্য কুমরপুর এলাকায়। তিনি গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের তেলিপাড়া এলাকার ডাক্তার নাহিদের বাড়িতে ভাড়া থাকেন।
মামলায় অন্য আসামিরা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি ও রুমানা আলী টুসি, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্ল্যাহ খান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মতিউর রহমান মতিসহ ১৩৯জন। তাদের সহযোগী আওয়ামী লীগের আরও ১০০ থেকে ১৩০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
বাদী মামলায় উল্লেখ করেন- শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ৬ জনের নির্দেশ অনুযায়ী বন্দুক, পিস্তল, লাঠি, লোহার রড, রামদা, ছেনি, চাপাতি, কোবাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দুষ্কৃতকারীরা গত ২০ জুলাই সকাল পৌনে ১০টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের তেলিপাড়ায় হানিমুন রেস্টুরেন্টের সামনে রাস্তায় অবস্থানরত আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করে। এ সময় হত্যার উদ্দেশ্যে উপর্যুপরিভাবে কিল-ঘুষি মেরে, লাঠি ও লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর এবং ধারালো কোপা ও দা দিয়ে কুপিয়ে খোরশেদ আলম রশিদসহ ২৫/৩০ জন আন্দোলনকারীকে রক্তাক্ত জখম করে।
একপর্যায়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ স্বশরীরে উপস্থিত থেকে তাদের হুকুমে ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় অবৈধ অস্ত্রধারী এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাত আসামিরা ছাত্র-জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করে। ওই সময় তাদের ছোড়া গুলিতে সকাল সোয়া ১০টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী নূর আলমের ডান চোখের উপরের অংশ দিয়ে গুলি ঢুকে মাথার পেছন দিয়ে বেরিয়ে যায়। এতে নূর আলম নিহত হন।