মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পাঁচ তারকা হোটেল গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা শামীম ওসমান থাকার গুঞ্জনে জড়ো হওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন মেয়র মো. মহসীন মিয়া মধু।
বুধবার সকাল থেকেই ওই হোটেলের সামনে ভিড় করেন উৎসুক জনতা। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী রিসোর্টে তল্লাশি চালিয়ে জানতে পারে খবরটি গুজব।
জানা যায়, শামীম ওসমান গ্র্যান্ড সুলতান রিসোর্টে আছেন, এমন গুঞ্জন শোনার পর থেকে আশপাশের উৎসুক লোকজন রিসোর্টের আশপাশে ভিড় করেন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি দল সেখানে গিয়ে রিসোর্টের প্রবেশদ্বারসহ আশপাশ ঘিরে রাখে। পরে পুলিশের সঙ্গে সেনাসদস্যরা হোটেলে তল্লাশি চালান। কিন্তু শামীম ওসমানকে সেখানে পাওয়া যায়নি। কিন্তু শিক্ষার্থীরা এই তথ্যে সন্তুষ্ট না হলে সেখানে মেয়রের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।
স্থানীয় পৌর মেয়র দলবল নিয়ে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান বলে অভিযোগ উঠেছে। ছবি: নিউজবাংলা
শিক্ষার্থীরা জানান, মেয়রের সঙ্গে শামীম ওসমানের সুসম্পর্ক রয়েছে। তিনি তাকে নিরাপদে রাখতে চান। তাছাড়া মেয়র মধু সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুশ শহীদের ঘনিষ্ঠ। তিনি আওয়ামী লীগের নেতাদের নিরাপদে রাখার জন্য ছাত্রলীগ ক্যাডারদের সঙ্গে নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন।
মহালম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের কাছে সত্য খবর আছে যে এখানে শামীম ওসমান আত্মগোপনে আছেন। কিন্তু মেয়র তাকে রক্ষা করার জন্য উঠে-পড়ে লেগেছেন। মানুষকে ভয় দেখিয়ে সরানোর জন্য তিনি দলবল নিয়ে হামলা চালান। তার নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কর্মীরা অস্ত্র নিয়ে হামলা করে।’
শ্রীমঙ্গল থানার ওসি বিনয় ভূষণ রায় বলেন, ‘আমরা পুলিশ ও সেনাবাহিনী গ্র্যান্ড সুলতান রিসোর্টে গিয়ে তল্লাশি করেছি। সেখানে শামীম ওসমান অবস্থান করা নিয়ে যে গুঞ্জন উঠেছিল তা সত্য নয়। কিছু মানুষ গ্র্যান্ড সুলতানের আশপাশে জড়ো হয়েছিল। আমরা তাদের সরিয়ে দিয়েছি। এখন স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে।’
শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. মহসিন মিয়া মধু বলেন, ‘এখানে কোন হামলার ঘটনা ঘটেনি। গ্র্যান্ড সুলতানে কেউ ছিল না। এখানে কেউ নেই। এসব গুজব।’
গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্টের ব্যবস্থাপক আরমান খান জানান, শামীম ওসমানের থাকার বিষয়টি গুজব। তাদের রিসোর্টটি অরাজনৈতিক ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি পাঁচ তারকা রিসোর্ট। এটি সুনামের সঙ্গে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও পর্যটন খাতকে আন্তর্জাতিক মানে রূপান্তরিত করেছে। দেশবাসী সেটা জানেন।
তিনি বলেন, ‘দেশের ক্রান্তিলগ্নে কিছু মহল বিচার-বিবেচনা না করেই ফেসবুকে উস্কানিমূলক কিছু পোস্ট ছড়িয়ে দিয়েছে, যা পর্যটন খাত তথা গ্র্যান্ড সুলতানের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করার জন্য যথেষ্ট। কোনো কিছু না জেনে-বুঝে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দেয়া থেকে বিরত থাকার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’