বাংলাদেশকে একটি পরিবারের মতো করে গড়ে তোলা হবে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে সকালে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এমন বাংলাদেশ করতে যাচ্ছি যেন আমরা এক পরিবার। এটা হলো মূল জিনিস। এখানে পরিবারের মধ্যে কোনো পার্থক্য করা, বিভেদ করার প্রশ্নই আসে না।
‘আমরা বাংলাদেশের মানুষ, বাংলাদেশি। এটাই আমরা নিশ্চিত করতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের গণতান্ত্রিক যে আকাঙ্ক্ষা, সেখানে আমরা বিবেচিত মুসলমান হিসেবে নয়, হিন্দু হিসেবে নয়, বৌদ্ধ হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে। আমরা চাই আমাদের অধিকারগুলো নিশ্চিত হোক।’
প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সব সমস্যার গোড়া হলো আমরা যত প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়েছি, সবগুলো পচে গেছে। এই কারণে গোলমালগুলো হচ্ছে। তাই প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো ঠিক করতে হবে।
‘ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হলে কে বিচার পাবে না বলেন?’
অধিকার সবার সমান উল্লেখ করে ড. ইউনূস এ দেশের মানুষ হিসেবে অধিকার আদায়ের জন্য সবাইকে এক কাতারে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের মূল কাজ অধিকার আদায় করা। মূলত সেখানে যেতে হবে। আমার অনুরোধ থাকবে, আপনারা কোনো দলাদলির মধ্যে চলে যাবেন না। দলাদলি হলেই মারামারি কাটাকাটি লেগে যাবে।
‘একত্রে আসুন। এক আইন যে, আমাদের আইনের অধিকার দিতে হবে। আমরা এক মানুষ। অধিকারের মধ্যে কোনো পার্থক্য করা যাবে না।’
হঠাৎ করেই ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে যান প্রধান উপদেষ্টা। দুপুর সোয়া ১২টায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা।
ওই সময় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা এমন রোগ, এর মূলে যেতে হবে। আপনারা যদি বলেন, আমাদের সংখ্যালঘু হিসেবে এটা বলছে, এটা হলো মূল সমস্যা থেকে আপনারা দূরে সরে যাচ্ছেন। আমাদের বলতে হবে আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। সেটা পেলে আমাদের বাক-স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হবে, যেগুলো আছে, আমরা নতুন কিছু বলছি না।
‘আমাদের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হলো আমাদের মূল লক্ষ্য।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনারা যদি টেনে নিয়ে আসেন, আমি অমুক, আমি তমুক আবার পুরোনো খেলায় চলে গেলেন। আপনাদের শিকার করার জন্য যারা বসে আছে, তারা এগুলো শিকার করে।
‘আপনারা বলবেন, আমরা বাংলাদেশের মানুষ। আমার সাংবিধানিক অধিকার এই, আমাকে দিতে হবে। সব সরকারের কাছে এটাই চাইবেন। আর কিছু চাইবেন না আপনারা।’