লালমনিরহাটে দুই সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতাকর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। সোমবার রাতে এসব তাণ্ডব চালানো হয়।
লালমনিরহাট ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সুমন খানের বাসা থেকে ছয়টি দগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ওই বাড়ির চতুর্থ তলা থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা শহিদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহগুলো উদ্ধারের পর লালমনিরহাট সদর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনার পদত্যাগের ঘোষণা ও দেশ ছাড়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় অস্থিরতা।
সোমবার বিকেলে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বিজয় মিছিল বের করা হয়। জেলার প্রধান প্রধান সড়ক ও মোড় দিয়ে উল্লাসে মেতে ওঠে জনতা। তবে দ্রুতই উৎসব হিংসাত্মক রূপ নেয়।
লালমনিরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেনসহ আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতার বাড়িঘর ও সম্পদের ওপর হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা। লালমনিরহাট-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান এবং সাখাওয়াত হোসেন সুমন খানের বাড়িতে গভীর রাত পর্যন্ত ভাঙচুর চলে।
এদিকে উদ্ধার হওয়া মরদেহ বেশি পরিমাণে দগ্ধ হওয়ায় তাদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
সাম্প্রতিক বৈষম্যবিরোধী বিক্ষোভে জড়িত নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের পরিবার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে মরদেহগুলো তাদের প্রিয়জনদের হতে পারে।
নিখোঁজ এক শিক্ষার্থীর বাবা রাজিবুল করিম সরকার জানান, পোড়া দেহাবশেষের মধ্যে যে পোশাক ও জুতা পাওয়া গেছে সেগুলোর সঙ্গে তার ছেলের জিনিসপত্রের মিল রয়েছে।
তিনি ধারণা করছেন, হতাহতরা ভবনটিতে আটকা পড়ে থাকতে পারে।
কর্তৃপক্ষ নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করতে এবং পরিবারের কাছে মরদেহ ফিরিয়ে দিতে ডিএনএ পরীক্ষার পরিকল্পনা করেছে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।