সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সরকারি সম্পত্তি রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
সোমবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এবং লুটতরাজ ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে জনগণের জানমাল ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীকে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ (সোমবার) রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং আমি তা গ্রহণ করেছি। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে আজ বঙ্গভবনে তিন বাহিনীর প্রধান এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়কদের সঙ্গে আলোচনা হয়।
‘শুরুতেই সেনাপ্রধান বিরাজমান সার্বিক পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তার আলোচনা সম্পর্কে আমাকে অবহিত করেন। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দও এসময় তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়। এছাড়া জরুরিভিত্তিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সব দল ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যত দ্রুত সম্ভব সাধারণ নির্বাচন করবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় আটকসহ সব বন্দিকে মুক্তি দেয়া হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান ও আহতদের সুচিকিৎসায় প্রয়োজনীয় সব সহায়তা দেয়া হবে বলে রাষ্ট্রপতি তার ভাষণে উল্লেখ করেন।
তিনি জানান, সর্বসম্মতিক্রমে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
রাষ্ট্রপতি দেশের অর্থনীতি, প্রশাসন ও শিল্প কল-কারখানা চালু রাখার লক্ষ্যে সবাইকে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘ছাত্র নেতৃবৃন্দ ও শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে অতি শিগগির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়া হবে। এছাড়া যারা হত্যা ও সহিংসতার সঙ্গে জড়িত, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।’
তিনি বলেন, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী অনতিবিলম্বে বর্তমান সংসদ বিলুপ্ত করা হবে। দেশের সব অফিস-আদালত আগামীকাল (মঙ্গলবার) থেকেই স্বাভাবিকভাবে চলবে।’
দেশকে বাঁচাতে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে ও প্রতিহিংসার ঊর্ধ্বে উঠে দেশকে এগিয়ে নিতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার জন্য আমি সবাইকে বিনয়ের সঙ্গে আহ্বান জানাচ্ছি।’
একটি সুন্দর ও সোনালী ভবিষ্যতের প্রত্যাশায় তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।