হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানা ঘেরাও করে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। এ সময় পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ছয়জন। আহত হয়েছেন পুলিশসহ দেড় শতাধিক।
নিহতরা হলেন- বানিয়াচং উপজেলার যাত্রাপাশা মহল্লার সানু মিয়ার ছেলে হাসান মিয়া (১২), মাঝের মহল্লার আবদুর নূরের ছেলে আশরাফুল ইসলাম (১৭), পাড়াগাঁও মহল্লার শমশের মিয়ার ছেলে মোজাক্কির মিয়া (৪০), কামালহানি মহল্লার নয়ন মিয়া (১৮), যাতুকর্নপাড়া মহল্লার আবদুর রউফের ছেলে তোফাজ্জল (১৮) ও পূর্বঘর গ্রামের দলাই মিয়ার ছেলে সাদিকুর (৩০)।
বানিয়াচং উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শামীমা আক্তার ছয়জন নিহত হওয়ার খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুরে বানিয়াচং উপজেলার এল আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে সমবেত হয়ে একটি মিছিল নিয়ে দুপুর ১টার দিকে উপজেলার নতুন বাজার হয়ে বড় বাজার যায়। সেখানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি আরও বাড়লে আন্দোলনকারীরা থানার সামনে দিয়ে যেতে চাইলে স্থানীয় ঈদগা এলাকায় পুলিশ বাধা দেয়। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। আন্দোলনকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকলে পুলিশ রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়তে থাকে। পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলে তিনজনসহ ছয়জন নিহত হন। আহত হন পুলিশসহ দেড় শতাধিক মানুষ।
শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলা ও নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের কয়েকটি গ্রাম থেকে কয়েক হাজার মানুষ দলবদ্ধ হয়ে থানায় হামলা ও আগুন দেন। পাশাপাশি উপজেলার ডাকবাংলোতেও আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় পুলিশ সদস্যরা থানা ছেড়ে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে হবিগঞ্জ সদর থেকে সেনাবাহিনীর টহল দল বেলা ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। রাত ৮টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এলাকাবাসী থানা ঘেরাও করে রেখেছিলেন।
হবিগঞ্জ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ রঞ্জন দে বলেন, ‘আন্দোলনকারীরা বানিয়াচং থানা ও ডাকবাংলোতে আগুন দিয়েছে। কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এখনও পরিস্থিতি উত্তপ্ত।’