নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিক্ষোভকারীদের মিছিলে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়েছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এর জের ধরে আওয়ামী লীগের ছয় নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন উত্তেজিত জনতা। এছাড়া তাদের ছোড়া গুলিতে আহত হয়েছেন চার আন্দোলনকারী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা ইউএনবিকে জানান, আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে বের করলে আওয়ামী লীগ কর্মী-সমর্থকরা তাদের প্রতিহত করতে মিছিলে এলোপাতাড়ি গুলি চালান। এতে চারজন গুলিবিদ্ধ হন। আহতদের মধ্যে সুমন মিয়া, সোহেব ও আল আমিনকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে এবং মীর জাহাঙ্গীরকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে গুলি উপেক্ষা করেই চার থেকে পাঁচ হাজার বিক্ষোভাকারী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী-সমর্থকদের ওপর চড়া হয়। তারা দৌড়ে পালাতে শুরু করলে ধাওয়া করে আন্দোলনকারীরা। এ সময় ছয়জন মাধবদী বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম দিকের বড় মসজিদে আশ্রয় নেন। উত্তেজিত জনতা মসজিদ থেকে তাদের বের করে এনে মসজিদের সামনেই পিটিয়ে তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায়।
নিহতরা হলেন- চরদিগলদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন, নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের ছোট ভাই যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য শ্রমিক লীগ নেতা মনিরুজ্জামান ভূইয়া ওরফে নাতি মনির, শ্রমিক লীগ নেতা আনিছুর রহমান সোহেল, মাধবদী পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার নওশের ও অজ্ঞাত একজন।
বিকেল সাড়ে ৫টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নিহতদের মরদেহ মসজিদের সামনেই পড়ে রয়েছে। তাদের মধ্যে নাতি মনিরের মরতেজ পরিবারের লোকজন উঠিয়ে নিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সাংবাদিকরা পুলিশকে খবর দিলেও পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়নি বলে জানা যায়।
মাধবদী থানার ওসি কামরুজ্জামানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ছয়জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন।
নরসিংদী শহরের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের জেলখানা মোড় চত্বরে রোববার সকাল থেকেই ছাত্র-জনতা জমায়েত হতে শুরু করেন। দুপুর ১টার দিকে তারা জেলখানা মোড় থেকে নরসিংদী স্টেডিয়াম পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত লোক সমাগম বেড়েই চলেছে।