ইরি-বোরো মৌসুমের শেষ সময় হওয়ায় নওগাঁয় বেড়েছে ধানের দাম। এর প্রভাব পড়েছে চালের বাজারে।
জেলায় গত এক মাসের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে দুই থেকে চার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এতে করে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষদের কষ্টের মধ্যে পড়তে হয়েছে।
নওগাঁ পৌর ক্ষুদ্র চাল বাজার সূত্রে জানা যায়, প্রকারভেদে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে দুই থেকে চার টাকা বেড়ে কাটারিভোগ ৬৮ থেকে ৭০ টাকা, জিরাশাইল ৬৪ থেকে ৬৬ টাকা এবং ব্রি-২৮ ও ২৯ চাল ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, চালকল মালিকরা বেশি দামে ধান কেনায় চাল উৎপাদনে খরচ বেশি পড়ছে। তাদের বেশি দামে চাল কিনে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। গত এক মাসের ব্যবধানে বাজারে সব ধরনের চালের দাম ২ থেকে ৪ টাকা বেড়েছে।
তাদের ভাষ্য, বেশি দামে চাল কিনে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন খাদ্যবান্ধন কর্মসূচি চালু থাকায় ক্রেতারা খোলা বাজার থেকে খুবই কম চাল কেনায় বাজার প্রায় ক্রেতা শূন্য।
সুলতানপুর মহল্লার বাসিন্দা রিকশাচালক আফজাল হোসেন বলেন, ‘বাড়িতে পাঁচজন সদস্য। প্রতিদিন আড়াই কেজি চাল লাগে। এক মাস আগে এক বস্তা ব্রিআর-২৮ চাল দুই হাজার ৬৫০ টাকায় কিনেছিলাম। পাঁচ দিন আগে কিনতে হয়েছে দুই হাজার ৭৫০ টাকায়।
‘এ ছাড়া তো নিত্যপণ্যের অন্যান্য জিনিসপত্রের দামও বেশি। দেশের বর্তমান পরিস্থিতির কারণে আমাদের আয়-রোজগার আগের তুলনায় কমেছে। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’
নওগাঁ পৌর ক্ষুদ্র চাল বাজার সমিতির সভাপতি মকবুল হোসেন বলেন, ‘এই সময়ে চালের দাম কিছুটা বাড়তি থাকে। প্রকারভেদে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে। বাজার প্রায় ক্রেতাশূন্য হওয়ায় ব্যবসায় মন্দা চলছে। চালের দাম বাড়ায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষদের কষ্ট বেড়েছে।’
নওগাঁ চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, ‘হাটে-বাজারে ধান ১ হাজার ২৫০ থেকে ১ হাজার ৫২০ টাকা মণ। গত এক মাসে প্রকারভেদে সব ধরনের ধানের দাম মণে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বেড়েছে। চালকল মালিকরা বেশি দামে ধান কিনে চাল উৎপাদন করতে খরচ বেশি পড়ছে।
‘পাইকারিতে ৫০ কেজি ওজনের বস্তায় ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়ে চাল বিক্রি হচ্ছে কাটারিভোগ ৬৫ থেকে ৬৭ টাকা, জিরাশাইল ৬২ থেকে ৬৪ টাকা এবং ব্রি-২৮ চাল ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা, তবে বাজার স্বাভাবিক হতে আউশ-আমন ধান কাটা-মাড়াইয়ের পর বাজারে ওঠা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’