ক্ষমতাসীন জোট ১৪ দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়া দ্রুতই শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, ‘জামায়াত-শিবির ধর্মের নামে মুখোশপরা সাম্প্রদায়িক অপশক্তি। তাদের প্রকাশ্যে ও গোপনে নানা অপতৎপরতা, নাশকতা, ষড়যন্ত্র ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। দেশের জনগণও সেটা অবগত।’
মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের যৌথসভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘গতকাল (সোমবার) ১৪ দলের সভায় জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে। জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা জন্য বিভিন্ন দিক থেকে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, মুক্তিযোদ্ধা, নাগরিক সমাজ দাবি তুলে আসছে।
‘শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, সে সময় গঠিত গণআদালত, অতীতে গণজাগরণ মঞ্চের দাবিও ছিল জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করা। এছাড়া দেশের সর্বোচ্চ আদালতের এক রায় জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের হাইকোর্টের রায় বহাল রাখে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন না থাকলে কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এমন আছে। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর হিটলারের নাৎসি পার্টি রাজনীতি করতে পারেনি জার্মানিতে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক জামায়াত ইসলাম দল হিসেবে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে উল্লেখ আছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ১৪ দলীয় জোটের চেয়ারপারসন, সেখানে ১৪ দলের শরিক দলগুলোর বক্তব্য, তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ, দলটির অতীত ও বর্তমান কর্মকাণ্ড, বিভিন্ন সময় দেয়া আদালতের রায় ইত্যাদি বিবেচনায় জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধে ১৪ দল সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
‘এখন ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে সরকার। আর বাস্তবায়নের পদ্ধতি কী হবে তার আইনগত দিক দেখেশুনে সরকার শিগগিরই পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। কারণ আমরা আইনগত দিকগুলো ভালোভাবে দেখে নিতে চাই। যাতে কোনো ফাঁক-ফোকর দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে এই অপশক্তি আর কোনো সুযোগ না পায়।’
তিনি বলেন, ‘গুজব ও আতঙ্ক সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে। গুজব সৃষ্টিকারীদের তথ্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে জানাতে সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’