কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়করা নিরাপদে রয়েছেন বলে তাদের পরিবারকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদ।
রাজধানীর মিণ্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে রোববার সংবাদ সম্মেলনে হারুন বলেন, ‘সমন্বয়কারীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে আমাদের হেফাজতে নিয়েছি। আমরা তাদের পরিবারকে আশ্বস্ত করছি যে চিন্তার কোনো কারণ নেই। আমরা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছি এবং তাদের পরিবারকেও আশ্বস্ত করতে হবে।’
এর আগে শুক্রবার তিন সমন্বয়ককে এবং শনিবার সন্ধ্যায় আরও দুজনকে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপি ডিবি প্রধান বলেন, ‘যারা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, বিভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করেছে এবং জামায়াত-শিবিরের দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার করা আমাদের দায়িত্ব।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কেন তাদের নিরাপত্তার দিকে নজর দিচ্ছি তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। কেউ যদি অনিরাপদ বোধ করে এবং প্রকাশ করে যে যেকোনো মুহূর্তে তার ক্ষতি হতে পারে, তবে তাকে নিরাপদে আনা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
‘মনে রাখতে হবে, নিরীহ ছাত্রদের মধ্যে অনুপ্রবেশ ও সহিংসতা উসকে দিয়ে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করার লক্ষ্যে যে ঘৃণ্য গোষ্ঠী রয়েছে, এরা তাদের দ্বারা পরিবেষ্টিত ছিল।’
হারুন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বা আন্দোলনের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, সেজন্য আমরা সমন্বয়কারীদের সুরক্ষার জন্য ডিবি হেফাজতে নিয়েছি। তাদের কতদিন হেফাজতে রাখা হবে সে বিষয়ে আমরা সমন্বয়কারী ও তাদের পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করব।’
সমন্বয়কারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে কি না- জানতে চাইলে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘নিরাপত্তার জন্য তারা আমাদের সঙ্গে থাকলেও তাদের সঙ্গে আমাদের নানা আলোচনা হয়েছে। আমরা জানতে চেয়েছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের সময় কারা তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে এবং কারা তাদের উস্কানি দিয়েছে। তারা আমাদের কিছু নাম ও নম্বর দিয়েছে।’
ডিবি হেফাজতে নির্যাতনের খবর প্রসঙ্গে হারুন বলেন, ‘আমার দেশ ছেড়ে পালানোর মিথ্যা দাবিসহ ফেসবুকে অনেক গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এমন গুজবে বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। যারা এই গুজব ছড়াচ্ছে তাদের লক্ষ্য বেশি মন্তব্য পাওয়া এবং অর্থ উপার্জন করা। হেফাজতে থাকা ব্যক্তিদের সঙ্গে আমরা কোনো দুর্ব্যবহার করিনি।’
পুলিশ নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হতে বাধা দিতে এবং ভয়ভীতি দেখাচ্ছে- বিভিন্ন মহলের এমন অভিযোগের জবাবে হারুন বলেন, ‘এসব গুজবে বিশ্বাস করবেন না। আইনের স্বার্থে আমরা অতীতে ২৮ অক্টোবরের সহিংসতায় জড়িতসহ অনেককে গ্রেপ্তার করেছি। তখন আমাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি। আজ আমরা তাদের সুরক্ষার জন্য হেফাজতে নিয়েছি এবং এই গুজব বিশ্বাস করা উচিত নয়।’
পরিবার ও শিক্ষকদের পারিবারিক চ্যানেলের মাধ্যমে নিরাপত্তা দেয়ার অনুরোধের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপি ডিবি প্রধান বলেন, ‘আমরা এ ধরনের কোনো অনুরোধ পাইনি। আমরা শুধু তাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে হেফাজতে নিয়েছি এবং তাদের আন্দোলন সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন করেছি।’