আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘লন্ডনে পলাতক সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমান ক্ষমতার জন্য গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে শ্রীলঙ্কা স্টাইলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন দখলের পরিকল্পনা করেছিলেন। কারফিউ জারি না হলে সে লক্ষ্যে তারা এগিয়ে যেত।’
রোববার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে সংগঠনের জেলা কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির নৃশংসতা হানাদার বাহিনীকেও হার মানিয়েছে। গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে শ্রীলঙ্কান স্টাইলে প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি দখলের টার্গেটও ছিল ওই রাতে। যদি কারফিউ জারি না হতো, এই প্ল্যান তাদের ছিলো। শ্রীলঙ্কা স্টাইলে প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি আক্রমণ করা, অভ্যুত্থানের ওপর রাইড করে হাওয়া ভবনের যুবরাজ ক্ষমতা দখল করতো। এটাই তো তাদের পরিকল্পনা।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি এখন স্বাধীনতাবিরোধী, দেশবিরোধী, উন্নয়নবিরোধী অপশক্তিকে নিয়ে নতুন প্লাটফর্ম করার কথা জানান দিচ্ছে। তাদের আহ্বানে তাদের দোসররা সাড়াএদবে এটাই স্বাভাবিক। মাথা যেদিকে যাবে লেজও সেদিকে অনুসরণ... এতে নতুনত্ব কিছু নেই। তবে তাদের আগুন-সন্ত্রাসের এই ঐক্য দেশ ও দেশের উন্নয়ন ধ্বংসের ঐক্য।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ গণভবনে নিহত/আহতদের পরিবার-পরিজনের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাদেরকে কিভাবে সাহায্য করা যায়..., তাৎক্ষণিক সাহায্য করছেন এবং ভবিষ্যতে যেন সচ্ছলভাবে চলতে পারেন সে ব্যবস্থা করছেন। এই কাজ তো বিএনপি করে না। ফখরুল পারেন শুধু হঠাৎ করে অন্ধকারে ঢিল ছুড়তে। তারা আছেন বিবৃতির রাজনীতি নিয়ে। তারা মানুষের কাছে যান না।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নিজ দলের লেলিয়ে দেয়া সন্ত্রাসীরা যখন জামায়াতের দোসরদের সঙ্গে নৃশংসভাবে মানুষ হত্যা করে, দেশের সম্পদ ধ্বংস করে, কর্তব্যরত পুলিশ বাহিনীর সদস্যকে হত্যা করে, এটা কি মানবিক? মধ্যযুগের নির্মমতাকে হার মানিয়ে যখন আগুন-সন্ত্রাসীরা লাশের ওপরও নির্যাতন চালায়, একাত্তরের সেই বর্বরতা আবারও দেখাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত। একাত্তরের প্রেতাত্মা এরা, হানাদারদের প্রেতাত্মা এরা।’
কাদের বলেন, ‘বাস র্যাপিড ট্রানজিট গাজীপুর থেকে চালু হওয়ার কথা। কিন্তু ৩৪টি এসকেলেটর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। কেমনে চালু করব? এগুলো তো মানুষের জন্য করেছিলাম, জনগণের জন্য করেছিলাম।
‘জনগণ আজ উপলব্ধি করছে যে মেট্রো রেল, এলিভেটেড চালু না থাকলে তারা কতটা কষ্টে থাকে। এই কষ্টটা আমরা দেইনি। দিয়েছে বিএনপি-জামায়াত। তারা ক্ষমতার জন্য সাধারণ মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে। সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিদেশ থেকে অনেক সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অরগানাইজ করছেন আমরা জানি। তাদেরকে বলব- কারও প্ররোচনায় বিবৃতি না দিয়ে এখানে এসে মেট্রো রেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বিআরটিএর ধ্বংসলীলা দেখুন। বিআরটিসির ৪৪টি গাড়ি পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। সে দৃশ্যপট দেখুন।
‘আজকে যেভাবে আক্রমণ হচ্ছে, বিবৃতি চলছে, বিবৃতি-যুদ্ধ চলছে দেশ-বিদেশে। সেখানে ওয়ান ইলেভেনের কুশীলব ড. ইউনূসও যোগ দিয়েছেন।
‘আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে চাই- আমরা আক্রান্ত, আক্রমণকারী নই। বিবৃতি আসছে আক্রান্তদের বিরুদ্ধে।’
মেট্রো, বিআরটি, পদ্মা সেতুতেও কয়েকবার আগুন লাগানোর চেষ্টা করা হয়েছে বলেও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী দাবি করেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তো গতকালও তালিকায় দেখেছি আমাদের ১২ জন কর্মীকে কি নির্যাতন...! আজকে পুলিশকে মেরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। গাজীপুরের উত্তরায় জুয়েল মোল্লাকে হত্যা করে রাস্তার ওপর ফেলে রাখা হয়েছে। এগুলো করেছে আক্রমণকারীরা।
‘ছাদ থেকে ফেলে দেয়া হয়েছে ১৫ জনকে। এসবের জন্য কারা দায়ী? শেখ হাসিনা যাচ্ছেন বিবেকের টানে, হৃদয়ের টানে; আপনাদের মতো মায়াকান্না করার জন্য নয়। বিবেক আর হৃদয়ের টানে তিনি হাসপাতালে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু মানুষের জন্য যা করতেন তার কন্যাও সেই সহানুভুতি নিয়ে যাচ্ছেন।’