সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন স্থাপনায় সহিংসতা চালানোর সময় পেট্রোল দিয়ে অগ্নিসংযোগ না করে গানপাউডার ব্যবহার করেছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ভাঙচুর করা রংপুরের বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা ও আওয়ামী লীগের কার্যালয় পরিদর্শন শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘গত ১৬ থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত সারা বাংলাদেশে যে তাণ্ডব হয়েছে, রংপুর সেই তাণ্ডব থেকে বাদ যায়নি। বরং অনেক জেলার চেয়ে এখানে বেশি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী চক্র, যারা দেশে জঙ্গির উত্থান ঘটিয়েছিল, সেই জামায়াত-বিএনপি জঙ্গিদের নিয়ে রাষ্ট্রকে পুরোপুরি অকার্যকর করার জন্য কাজ করেছে। তারা কোটাবিরোধী আন্দোলনে কৌশলে যুক্ত হয়ে নারকীয় তাণ্ডব চালিয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘রংপুরে তারা নারকীয় তাণ্ডব চালিয়েছে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলা চালিয়ে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে। পুলিশের গাড়িসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক গাড়ি জ্বালিয়ে মালামাল লুট করেছে। উপাচার্য ও তার পরিবারসহ ২০ জনকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে।
‘তাজহাট থানায় আক্রমণ করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ অফিস জ্বালিয়ে দিয়েছে। মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি, ডিবি ডিসি ক্রাইম, নবাবগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ি, ধাপ পুলিশ ফাঁড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘অপরাধীদের গডফাদার, অর্থের জোগানদাতা কাউকেই আমরা ছাড়ব না। আমরা সবাই মিলে ওদের চিহ্নিত করে প্রতিহত করব এবং বিচারের মুখোমুখি করব।’
কারফিউ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সেনাবাহিনী মাঠে নেমেছে। বিজিবি, পুলিশ সবাই মিলে জনগণকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য কাজ করছে। ক্রমান্বয়ে সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। আমরা কারফিউর সময় নিয়ে প্রতিদিনই বৈঠক করছি যে আগামীকাল সময় কতটা কমানো যায়। তবে আস্তে আস্তে সব স্বাভাবিক হয়ে গেলে কারফিউর আর প্রয়োজন হবে না।’
মন্ত্রী আসাদুজ্জামান বলেন, ‘এই আন্দোলনে দুজন সাংবাদিক শাহাদাতবরণ করেছেন। এক নারী সাংবাদিক হয়রানির শিকার হয়ে এখন ট্রমাটাইজ হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অনেক সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
‘এখনও নিজের জীবনকে বিপন্ন করে সংবাদের জন্য কাজ করছেন তারা। এ জন্য সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানাই এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
আন্দোলনের সময় রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন, মেট্রোপলিটন তাজহাট থানা, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসসহ বিভিন্ন সরকারি অফিসে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর করা হয়। এসব স্থান পরিদর্শনকালে পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।
এর আগে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন শেষে রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আলোচনা সভায় যোগ দেন মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।