বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যুক্তরাষ্ট্র লাশ পড়েছে বলার পরই লাশ পড়ল: প্রধানমন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ২৪ জুলাই, ২০২৪ ২১:৩৬

কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টির পেছনে অনেক বড় ষড়যন্ত্র ছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটা যে একটা বিরাট চক্রান্ত সেটা বোঝাই যাচ্ছিল। এবার আমরা আগে থেকেই খবর পেয়েছি যে লোক ঢুকবে। গোয়েন্দা দিয়ে সব হোটেল, কোথায় থাকতে পারে সেগুলো নজরদারিতে আনা হয়েছে। কিন্তু ওরা চলে এসেছে ঢাকার ঠিক বাইরের পেরিফেরিতে।’

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াতের সাম্প্রতিক ধ্বংসাত্মক তাণ্ডবলীলার পেছনে জামায়াত-বিএনপির পাশাপাশি একটি প্রভাবশালী দেশ জড়িত থাকার ইঙ্গিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এডিটরস গিল্ডসের উদ্যোগে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদক ও হেড অফ নিউজ এবং সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এমন ইঙ্গিত দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আরেকটা জিনিস খেয়াল করবেন- তখনও কিন্তু লাশ পড়েনি। কিন্তু স্টেট ডিপার্টমেন্টের (যুক্তরাষ্ট্রের) বক্তব্যে এসে গেল যে লাশ পড়েছে। লাশের খবর তাদের কে দিল? তাহলে লাশ ফেলার নির্দেশটা কে দিয়েছে? এটাও খবর নেয়া দরকার। এবং তারপরে কিন্তু লাশ পড়তে শুরু করল।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি জানতাম যে ইলেকশন করতে দেবে না। তারপরও আমরা ইলেকশন করে ফেললাম। ইলেকশন করার পর বলা হলো ইলেকশন গ্রহণযোগ্য হবে না। সেটাও গ্রহণযোগ্য আমরা করতে পেরেছি। সরকার গঠন করতে পেরেছি। আমার একটা ধারণা ছিল এই ধরনের একটা আঘাত আবার আসবে।’

কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টির পেছনে অনেক বড় ষড়যন্ত্র ছিল উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘এটা যে একটা বিরাট চক্রান্ত সেটা বোঝাই যাচ্ছিল। ... এই যে লোক চলে আসা, এবার আমরা কিন্তু আগে থেকে খবর পেয়েছি লোক ঢুকবে। গোয়েন্দা দিয়ে সব হোটেল, কোথায় থাকতে পারে সেগুলো কিন্তু নজরদারিতে আনা হয়েছে। কিন্তু ওরা সেখানে ছিল না; এরা চলে এসেছে ঢাকার ঠিক বাইরের পেরিফেরিতে (সংলগ্ন এলাকায়)।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সারাদেশ থেকে শিবির-জামায়াত ঢাকায় এসেছে। সাথে ছাত্রদলের ক্যাডাররাও সক্রিয় ছিল। যতগুলো ঘটনা ঘটেছে প্রতিটিতে এরা (বিএনপি) সক্রিয় ছিল।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন) এই ভাবে কেন সুযোগটা সৃষ্টি করে দিল সেই জবাবটাও জাতির কাছে তাদেরকে দিতে হবে। আমরা তো বার বার তাদের সঙ্গে বসলাম। প্রজ্ঞাপন, সেটাও করা হলো। তাদের কোন দাবি তো পূরণ করা ছাড়া রাখিনি।

‘যে দাবি তারা করেছিল কোটা সংস্কারে, যতটুকু চেয়েছিল তার থেকে অনেক বেশি দিয়েছি। যখন তাদের দাবি মেনে নেয়া হলো, তারপরও তারা এই জঙ্গিদের সুযোগ করে দিল কেন? কোটা আন্দোলনকারীদের কিন্তু জাতির কাছে একদিন এই জবাব দিতে হবে। কেন মানুষের এত বড় সর্বনাশ করার সুযোগ করে দিল।’

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের বিষয়ে সরকারের সহানুভূতিশীল মনোভাবের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা সব সময় তাদের সঙ্গে সহানুভূতি দেখিয়েছি। তাদেরকে সব সময় নিরাপদ রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু যা ঘটনা ঘটেছে এটা কখনও ক্ষমা করা যায় না।’

দেশবাসীকে সব ধরনের সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবন্ধু-কন্যা বলেন, ‘যেভাবে ধ্বংসযজ্ঞ, পোশাক তৈরি করা হলো কালো প্যান্ট, সাদা শার্ট; ফলস (ভুয়া) আইডি কার্ড, পেছনে ব্যাগের মধ্যে কী আছে? পাথর আর অস্ত্র ধারালো। মসজিদে অস্ত্র নিয়ে ইমামকে মাইকিং করতে বাধ্য করা, এই যে জঙ্গিবাদের একটা বীভৎস চেহারা সবার সামনে চলে এলো এটার বিরুদ্ধে জাতিকে, সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘দেশবাসীকে অনুরোধ করব, যারা এ ধরনের দেশের সর্বনাশটা করল, যারা আজকে গণমানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতির জন্য, তাদের আয় বৃদ্ধি, তাদের চলাচলের সুবিধার জন্য, তাদের জীবন-মান উন্নত করবার জন্য যতগুলো স্থাপনা তৈরি করেছি সবগুলোতেই তারা আঘাত করেছে, সবগুলো তারা ভেঙে দিয়েছে। এসব ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে ক্ষতিটা কার? নিশ্চয়ই জনগণের। এখানে তো জনগণকেই রুখে দাঁড়াতে হবে। এই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনগণকেই সোচ্চার হতে হবে।

বিগত বছরগুলো গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকা এবং স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জঙ্গিবাদ দমন করে দীর্ঘ সময় একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করেছি। সেই জায়গাটায় আজকে চরম একটা আঘাত দিল।’

সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে কারফিউ দেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি তো চাইনি আমাদের গণতান্ত্রিক ধারায় এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটুক, আমাদের কারফিউ দিতে হোক। ... একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশে এটা আমাদের কাম্য ছিল না। কিন্তু আজকে না দিয়ে কোনো উপায় ছিল না। না দিলে আরও যে কত লাশ পড়ত তার হিসাব নেই।’

গণমাধ্যমগুলোকে সঠিক সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে গুজব প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘এটা ঠিক, অনেকে গুজবে কান দেয়। কান নিয়ে গেছে চিলে, ওটার পিছে ছোটে, কানে হাত দিয়ে দেখল না কান আছে কি না। মিথ্যাচারের হাত দেখে মানুষকে রক্ষা করুন, মানুষ যাতে সঠিত তথ্য জানতে পারে সেভাবে সংবাদগুলো পরিবেশন করুন।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি। এর সুফল মানুষ পেল, কুফলও মানুষ পেল। আপনাদের কাছে যা তথ্য আছে আপনারা তা ব্যাপকভাবে প্রচার করে জনমত সৃষ্টি করুন।’

মতবিনিময় সভা সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান। স্বাগত বক্তব্য দেন এডিটরস গিল্ডস-এর প্রেসিডেন্ট মোজাম্মেল হক বাবু।

এরপর একের পর এক বক্তব্য দেন সিনিয়র সাংবাদিক আবেদ খান, বাংলাদে সম্পাদক নঈম নিজাম, ডিবিসি টেলিভিশনের এডিটর ইন চিফ মঞ্জুরুল ইসলাম, ভোরের কাগজ সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, ঢাকা জার্নালের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, নাগরিক টেলিভিশনের হেড অফ নিউজ ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব দীপ আজাদ, আমাদের সময়ের নির্বাহী সম্পাদক মাইনুল আলম, বাংলাদেশ জার্নাল সম্পাদক শাজাহান সর্দার, ডিবিসি টেলিভিশনের নিউজ এডিটর জায়েদুল আহসান পিন্টু, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের হেড অফ নিউজ আশিষ সৈকত, একাত্তর টিভির হেড অফ নিউজ শাকিল আহমেদ, অ্যানার্জি অ্যান্ড পাওয়ার সম্পাদক মোল্লা আমজাদ, আরটিভর হেড অফ নিউজ মামুনুর রহমান খান প্রমুখ।

এ বিভাগের আরো খবর