রাজধানীর রামপুরায় বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) প্রধান কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিটিভি কার্যালয়ের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন এক দল লোক। পরে তারা ভেতরে থাকা দুটি মাইক্রোবাস ও কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন।
বিটিভির মহাপরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে গণমাধ্যমকে জানান, আগুন লাগার চার ঘণ্টাতেও ফায়ার সার্ভিস বিটিভি ভবনে আসেনি। আগুন ছড়িয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
তিনি বলেন, ‘কিছু লোক দুপুর ২টার পর বিটিভি কার্যালয়ে হামলা করে। তারা রিসিপশনে ভাঙচুর করে, পাশে থাকা বেশকিছু গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে ঢাকা কেন্দ্র এবং ডিজাইন শাখায়ও আগুন ধরিয়ে দেয়।
‘সন্ধ্যা ৬ টায়ও আগুন জ্বলছে। ডিজাইন শাখা পুড়ে গেছে। এখন মূল কেন্দ্র জ্বলে গেলে বিটিভির প্রচার বন্ধ হয়ে যাবে।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিকেল ৩টার দিকে শতাধিক লোক প্রধান ফটক ভেঙে বিটিভি কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে পড়েন। এ সময় প্রধান ফটকের বাইরে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও দুটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এ সময় বিটিভি কার্যালয়ে অবস্থানরত কর্মকর্তা–কর্মচারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
বিক্ষুব্ধদের তৎপরতার মুখে বিটিভি কার্যালয়ের সামনে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা মালিবাগ মোড়ে গিয়ে অবস্থান নেন। তারা কিছুক্ষণ পরপর বিক্ষোভকারীদের দিকে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়েন।
পুলিশ, বিজিবি ও আনসার সদস্যরা সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে বিটিভি ভবনের সামনে এসে অভিযান শুরু করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়।
সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার বিটিভি কার্যালয়ের ওপর দিয়ে টহল দেয়। এর প্রায় ১৫ মিনিট পর সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে র্যাবের একটি হেলিকপ্টারও টহল দেয় সেখানে।
সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের ভেরিফায়েড ফেসবুকে পেজে একটি পোস্টে বলা হয়, ‘বিটিভিতে ভয়াবহ আগুন। দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ফায়ার সার্ভিসের দ্রুত সহযোগিতা কামনা করছি। ভেতরে আটকা পড়েছেন অনেকে।’
আন্দোলনকারীরা এর আগে দুপুরে রামপুরা ব্রিজের পাশে ট্রাফিকের সহকারী পুলিশ কমিশনারের কার্যালয় ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় আফতাবনগরে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশদ্বারে একটি পুলিশ ফাঁড়ির ফটকে থাকা তিনটি মোটরসাইকেলেও আগুন দেয়া হয়।