সরকারি চাকরির সব গ্রেডে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের নামে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা করেছে পুলিশ।
রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের পরিবহন শাখার চালক খলিলুর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
মামলায় আসামি হিসেবে সুনির্দিষ্ট কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি, তবে অজ্ঞাতনামা হিসেবে অনেকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলাটি শুক্রবার করা হলেও বিষয়টি প্রকাশ পায় শনিবার।
জানতে চাইলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাজিরুর রহমান এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবেন না বলে জানান।
যা আছে এজাহারে
দণ্ডবিধির ১৪৩, ১৪৭, ১৪৯, ১৫২, ৩৪১, ৩২৩, ৩৩২, ৩৫৩, ৪২৭ ও ৫০৬ ধারায় মামলাটি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী খলিলুর রহমান বলেন, ‘গত ১১ জুলাই (বৃহস্পতিবার) কোটা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি উপলক্ষে এপিসি এবং ওয়াটার ক্যাননসহ দুপুর দুইটা থেকে সিনিয়র স্যারসহ শাহবাগ থানাধীন শাহবাগ মোড়ে অবস্থান করছিলাম। আন্দোলনকারী অজ্ঞাতনামা ছাত্ররা বিকেল চারটা ৪০ মিনিটে স্লোগান দিতে দিতে শাহবাগ মোড়ের দিকে অগ্রসর হতে থাকে এবং একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অতিক্রম করে সরকারি দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করে শাহবাগ মোড়ে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে ও পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের এলোপাতাড়ি মারপিট করে জখম করে।
‘এরপর তারা ইন্টারকন্টিনেন্টালের দিকে অগ্রসর হতে থাকলে সিনিয়র স্যাররা ছাত্রদের বুঝিয়ে পুনরায় শাহবাগ মোড়ে ফিরিয়ে নিয়ে আসার সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পাশে নিরাপদ স্থানে রাখা এপিসি-২৫ ও ওয়াটার ক্যাননের চারদিকে ঘেরাও করে অনেকসংখ্যক আন্দোলনকারী উঠে উদ্দাম নৃত্য শুরু করে এবং ওয়াটার ক্যানন ড্রাইভারকে গাড়ি থেকে জোর করে বের করার চেষ্টা ও গতিরোধ করে। এর ফলে এপিসি ২৫ এবং ওয়াটর ক্যাননের বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতি হয়, যার পরিমাণ প্রায় পাঁচ লাখ টাকা।’
এজাহারে বলা হয়, ‘ছাত্রদেরকে সিনিয়র স্যারগন বুঝিয়ে এপিসি ও ওয়াটার ক্যানন থেকে নামিয়ে আনে এবং পরিবেশ পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন, কিন্তু তাহারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে পানির বোতল, টেপটেনিস বল ও ইটের টুকরা ছুড়ে মারে। এতে অনেক পুলিশ আঘাতপ্রাপ্ত হয়।
‘অজ্ঞাতনামা ছাত্ররা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শাহবাগের আন্দোলনে যোগদান করে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বারডেম হাসপাতালের গেটের ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশকে আহত করে এবং পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল কটূক্তি করতে থাকে।’
এতে আরও বলা হয়, ‘ছাত্ররা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা এবং শাহবাগ থানায় ছাত্রদের ধরে নিয়ে গেছে বলে গুজব ছড়িয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করে এবং পুলিশকে মারার জন্য তেড়ে আসে ও পুলিশকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে শাহবাগ মোড় ত্যাগ করে।’