সরকারি চাকরির সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম মাত্রায় এনে সংসদে আইন পাস করার এক দফা দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা। এছাড়া রাজধানীর আরও বিভিন্ন মোড় অবরোধের কারণে হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন পথচারীরা।
বিকেল সোয়া ৫টায় দেখা যায় সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন হেঁটে শাহবাগ মোড় পার হচ্ছেন। তিনি যাচ্ছেন কাঁটাবনের দিকে। তার সঙ্গে আরও পাঁচ-ছয়জন সহকারীকে দেখা গেছে। দেখা যায়, চলার পথে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকের সঙ্গেও তিনি কথা বলেন। তবে কী কথা হয়েছে সেটি জানা যায়নি। অবশ্য পরে তিনি হেঁটেই কাঁটাবনের দিকে এগিয়ে যান।
এদিকে বিকেল সাড়ে ৪টায় শাহবাগের আশপাশের সব মোড়ে অবস্থান নেয়া শিক্ষার্থীদের ফেরত আসতে বলা হয় আন্দোলনের সমন্বয়কদের পক্ষ থেকে। পরে শিক্ষার্থীরা ব্লকেড ছেড়ে শাহবাগের জমায়েতে যোগ দেন। ফলে বর্তমানে শাহবাগ ছাড়া আশপাশের আর কোনো মোড়ে অবরোধ নেই।
আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শাহবাগ থেকেই রাত ৮টায় পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
বুধবার দুপুর পৌনে ১২টায় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। এর আগে সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় অবরোধের মাধ্যমে ‘ঢাকায় বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি শুরু করেন ঢাকা কলেজ ও ইডেন কলেজের শিক্ষার্থীরা।
পরে সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা দেয় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের রায়ের বিষয়ে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা আগেও বলেছি, এখনও বলছি- আমাদের দাবি নির্বাহী বিভাগের কাছে। হাইকোর্ট কী রায় দিয়েছে সেটি আমাদের দেখার বিষয় নয়। তবে হাইকোর্টের রায়ের প্রতি আমাদের সম্মান আছে। আমাদের দাবি আইন পাস করে এটির স্থায়ী সমাধান।
আইন পাস সময়সাপেক্ষ ব্যাপার জানালে তিনি বলেন, ‘তাহলে নির্বাহী বিভাগের পক্ষ থেকে যদি আমাদের এক দাবি নিয়ে কোনো সুস্পষ্ট বক্তব্য দেয়া হয় তাহলে আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো কিনা সেটি বিবেচনা করতে পারি। অন্যথায় আমরা রাজপথ থেকে সরছি না।’
আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘এই রায়ে আমরা আশাহত হয়েছি। তবে আমরা দমে যাইনি। আমরা মনে করি, আমাদের আন্দোলনকে ডিসপার্স করার জন্য এই রায় রাষ্ট্রযন্ত্রের একটা কৌশল।
‘আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ছি। তারপরও আন্দোলন শেষ করছি না। যতক্ষণ নির্বাহী বিভাগ থেকে কোনো লিখিত পরিপত্র জারি না হচ্ছে বা স্পষ্ট কোনো বক্তব্য না পাচ্ছি ততক্ষণ আমরা মাঠ ছাড়ছি না।’