‘হোটেল সান মেরিনা’- পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় যেটির নির্মাণ কাজ শুরুই হয়নি। তবুও এখন সেটি টক অফ দ্য টাউন। নিজের মালিকানা উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সৈয়দ আবেদ আলী একটি পোস্ট দেয়ার পরই আলোচনায় এসেছে হোটেলটি।
সৈয়দ আবেদ আলী বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) পরীক্ষাসহ অন্তত ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত। তিনি পিএসসি চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক।
কুয়াকাটায় সোমবার দুপুর থেকে এই হোটেলটি নিয়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটি নিয়ে নানা রকম পোস্ট দিয়েছেন কুয়াকাটাসহ সারাদেশের মানুষ। সূত্র: ইউএনবি
আবেদ আলীর বাড়ি মাদারীপুরের ডাসার উপজেলায়। তার বাবার নাম আবদুর রহমান মীর। ডাসার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার জন্য তিনি ইতোমধ্যে এলাকায় পোস্টার-ব্যানার টানিয়েছেন।
আবেদ আলী গত ১৮ মে তার ফেসবুক পেজে এই হোটেল নিয়ে স্ট্যাটাস দেন। তবে গত দুদিন ধরে বিষয়টি কলাপাড়া-কুয়াকাটাসহ উপকূলীয় এলাকার মানুষের চোখে পড়ে।
‘হোটেল সান মেরিনা’ নিয়ে আবেদ আলী তার ফেসবুক পাতায় লিখেছেন, ‘আমাদের নতুন হোটেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলাম আজ। সমুদ্রকন্যার পাড়ে আজীবন নিজের জন্য একটা থাকার ব্যবস্থা ও একইসঙ্গে একটা হোটেলের মালিকানা অর্জন করতে আপনিও শেয়ার কিনতে পারেন। শেয়ার কিনতে যোগাযোগ করুন।’
সান মেরিনা হোটেলটি এখনও নির্মাণ হয়নি। নির্ধারিত জায়গাটিও খালি পড়ে আছে। সামনের অংশে সাত থেকে আটটি টিনশেড দিয়ে তৈরি রুম আছে। এছাড়া হোটেলটি কোন ডিজাইনে হবে তার ছবি দিয়ে একটি সাইনবোর্ড ঝুলানো রয়েছে হোটেলের নির্ধারিত জায়গার সামনের অংশে।
২০১০ সালে এই হোটেলের মূল মালিক দাবিদার মো. মোশারফ হোসেন আবাসিক হোটেল নির্মাণ করার জন্য কুয়াকাটা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পাঞ্জুপাড়ায় ৪০ শতাংশ জমি কেনেন।
সান মেরিনা হোটেলটির বিস্তারিত তথ্যের অনুসন্ধান করে জানা যায়, এটির মালিক মো. মোশাররফ হোসেন। তিনি লিবার্টি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এই গ্রুপটি পিডিবি (পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড), পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অফ বাংলাদেশ (পিজিসিবি), রুরাল ইলেক্ট্রিফিকেশন বোর্ড (আরইবি), ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি), ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) ঠিকাদার হিসেবে সাবস্টেশন ও ট্রান্সমিশন লাইনের কাজ করে থাকে।
সান মেরিনা হোটেলে কর্মরত মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমি মোশাররফ স্যারের অধীনে আট বছর যাবৎ চাকরি করছি। সৈয়দ আবেদ আলী নামে কাউকে আমি দেখিনি। তবে তিনি কয়েক মাস আগে এখানে এসে হোটেলের শেয়ার নেয়ার জন্য আলোচনা করেছেন। তখন আমি তাকে মোশাররফ স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছি। তখন একটা ছবি তুলতে দেখেছি আমাদের হোটেলের বিজ্ঞাপনের সঙ্গে।’
হোটেলটির মালিক মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘দু-তিন মাস আগে সৈয়দ আবেদ আলী আমার হোটেলটির সামনে অপর একটি হোটেলে এসে ওঠেন। পরদিন সকালবেলা আমার হোটেলের জায়গায় গিয়ে শেয়ার ক্রয় করবেন বলে জানান। তখন তিনি আমার লোকের কাছ থেকে শেয়ার ক্রয়ের বিস্তারিত জেনে যান। এ পর্যন্তই। আসলে আমি কখনও তাকে দেখিনি এবং চিনিও না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আবেদ আলীকে একজন টাউট প্রকৃতির লোক বলে মনে হয়েছে। আমি এজন্য ঢাকার গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করব।’