শিক্ষকদের আন্দোলনে বিএনপি ভর করেছে বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যে মন্তব্য করেছেন, সে বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া।
এ বিষয়ে অধ্যাপক নিজামুল সোমবার বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনে বিএনপির শিক্ষকরাও আছেন। সব শিক্ষক ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা এই আন্দোলনটা করছি। আমরা কোনো সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি না।
‘এখন উনি (ওবায়দুল কাদের) সিনিয়র মানুষ। উনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটি নিয়ে আমাদের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই।’
একই বিষয়ে শিক্ষক সমিতি ফেডারেশেনর সভাপতি অধ্যাপক আখতারুল ইসলাম বলেন, ‘উনি (ওবায়দুল কাদের) এটা বলেছেন কি না, আমার জানা নেই। তাই এটা নিয়ে আমরা উনাদের সাথে কোনো বিতর্কে জড়াতে চাই না।
‘যদি বলেও থাকেন তাহলে বলব, হ্যাঁ, আমাদের আন্দোলনে বিএনপিপন্থি শিক্ষকরাও আছেন। আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা এই আন্দোলন করছি, তবে আমরা কোন দলের পক্ষে বা বিপক্ষে আন্দোলন করছি না।’
গত ৩ জুলাই আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সাভারে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় কাদের বলেন, আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন পরনির্ভরশীল হয়ে শিক্ষক আন্দোলন, কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করেছে।
কোটা নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে বৈঠকে বসছে। আর শিক্ষককরা এখনও কোনো বৈঠকে বসতে পারেননি।
এ নিয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক আখতার বলেন, ‘এটা আমাদের অবাক করছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে আমার কথা নেই, কিন্তু আমরা শিক্ষককরা ক্লাসে ফিরতে পারছি না, ল্যাব-ক্লাসরুম সব বন্ধ আছে।
‘সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অচল। এটার চেয়ে প্রায়োরিটি আর কী আছে? এতকিছুর পরও সরকার যে আমাদের অ্যাটেনশন দিচ্ছে না, এটা সত্যিই দুঃখজনক।’
এদিকে সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহারের দাবিতে ষষ্ঠ দিনের মতো সোমবার সর্বাত্মক কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
দুপুরর ১২টায় ঢাবির কলা ভবনের সম্মুখ গেটে শিক্ষকরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
গত ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতির অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।
অবস্থান কর্মসূচিতে ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে তিন দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ও কর্মবিরতি করে যাচ্ছি, কিন্তু আমাদের দাবি মানার কোনো অবস্থা আমরা দেখছি না।
‘আমরা পূর্বেও বলেছি, এখনও বলছি, আমরা আমাদের দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত পিছু হটব না। বিজয় নিয়েই আমরা ক্লাসরুমে ফেরত যাব।’
শুধু শিক্ষকরা নন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এ প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহারের দাবিতে ১ জুলাই থেকে কর্মবিরতি পালন করে আসছেন।