বগুড়ার সেউজগাড়ী আমতলা এলাকায় সনাতন ধর্মালম্বীদের রথযাত্রার সময় হতাহতের ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বলে জানিয়েছে ইউএনবি।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে জানানো হয়, রোববার বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে রথযাত্রার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু ও ৪৩ জন আহত হন। এরপর রাতেই অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পিএম ইমরুল কায়েসকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটিতে পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, বিদ্যুৎ বিভাগের প্রতিনিধি, সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি ও ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি রয়েছেন বলে ইউএনবিকে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) সাইফুল ইসলাম।
তদন্ত কমিটিকে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
ঘটনার রাতেই প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের পরিচয় জানা গেছে, যারা হলেন বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার কুন্দুগ্রামের ভবানী মোহন্তের ছেলে নরেশ মোহন্ত, শহরের তিনমাথা রেলগেট এলাকার মন্তেস্বরের স্ত্রী আতশী, শাজাহানপুর উপজেলার গোহাইল গ্রামের সুদেবের স্ত্রী রনজিতা, শিবগঞ্জ উপজেলার কুলুপাড়া গ্রামের প্রয়াত নারায়ণ কুমারের ছেলে অলক কুমার ও সারিয়াকান্দি উপজেলার সাহাপাড়ার বাসুদেব সাহার স্ত্রী জলি সাহা।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল ও ২৫০ শয্যা মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে এখনও ৪৩ জন চিকিৎসাধীন। বিদ্যুৎস্পর্শে সৃষ্ট আগুনে অনেকের শরীর ঝলসে গেছে।
আহত লোকজনকে হাসপাতালে নেয়ার পর তাদের পরিবারের সদস্যসহ রথযাত্রায় অংশ নেয়া শত শত মানুষ শজিমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগ এবং ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) ভিড় করেন।
ওই হতাহতের ঘটনার পর রথযাত্রা সংক্ষিপ্ত করা হয়। দুর্ঘটনার পরপরই বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপু, বগুড়ার জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শুভাশীষ পোদ্দার লিটন শজিমেক হাসপাতালে যান।
ডিসি সাইফুল ইসলাম জানান, সৎকারের জন্য প্রাণ হারানো প্রত্যেকের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আহতদের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার বিকেল পাঁচটার দিকে বগুড়া শহরের সেউজগাড়ি ইসকন মন্দিরের কাছে সেউজগাড়ি পালপাড়া এলাকায় রথযাত্রার উদ্বোধন করা হয়। এরপর রথটি ৫০০ গজ পূর্ব দিকে সেউজগাড়ি আমতলা মোড়ে পৌঁছার পরই রথের লৌহ দণ্ডটি সড়কের ওপরের ১১ হাজার ভোল্টের তারের সংস্পর্শে আসে। তখনই আগুন ধরে যায়। ওই সময় হুড়োহুড়িতে মানুষ সড়কের ওপর পড়ে যায়।
আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল এবং শজিমেক হাসপাতালে নেয়া হয়। এতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়।