চাকরিতে কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো বৃহস্পতিবার শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। এতে চারপাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে।
দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা এ মোড় অবরোধ করেন।
এর আগে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বেলা ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে অবস্থান নেয়া শুরু করেন আন্দোলনকারীরা।
পরে তাদের এই অবস্থানে মিছিল সহকারে যোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল, ঢাকার আশেপাশের বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এ মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল প্রদক্ষিণ করে ভিসি চত্বর, টিএসসি হয়ে শাহবাগ এলে শিক্ষার্থীরা এ মোড়ে বসে পড়েন। এর আগে সেখানে অবস্থান নেয় পুলিশ, তবে অবরোধের সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়নি।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় দখলেই ছিলেন।
মিছিলে কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। শিক্ষার্থীরা ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘হাইকোর্টের রায় মানি না মানব না’, ‘কোটা বাতিল করো, বাতিল করো’, ‘ছাত্রসমাজ গড়বে দেশ, মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ ধরনের স্লোগান দেন।
এদিকে আজ সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি মুলতবি হয়েছে।
রিট আবেদনকারী পক্ষের সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ‘নট টুডে’ বলে আদেশ দেয়। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ আজ এ আদেশ দেয়।
কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলো হলো পরবর্তী সময়ে সরকার কোটাব্যবস্থা নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে চাইলে ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিত হবে। সংবিধান অনুযায়ী অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করতে হবে।
এ ছাড়া চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা-সুবিধা একাধিকবার ব্যবহারের সুযোগ বন্ধ করা, কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোয় মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেয়া এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা।