ভারতকে রেল করিডোর এবং সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে সই হওয়া ১০টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) নিয়ে সরকার মিথ্যাচার করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, এসব নিয়ে মিথ্যা প্রচার চালিয়ে দেশের জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে সরকার।
সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধির পাশে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। সূত্র: ইউএনবি
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশকে ভারতের ওপর নির্ভরশীল করার ষড়যন্ত্র করছে। তারা (সরকার) কখনোই বাংলাদেশের জনগণকে সত্য কথা বলেনি। তারা সব সময় মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করেছে।
‘সই করা সমঝোতা স্মারকের অর্থ হলো- এগুলো খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশকে ভারতের ওপর নির্ভরশীল করবে। সবচেয়ে বিপজ্জনক বিষয় হলো- সরকার যে রেল করিডোর দিচ্ছে তা বাংলাদেশের কোনো কাজে আসবে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারা (ভারত) তাদের রেললাইনের জন্য আমাদের জমি ব্যবহার করবে। সেখানে বাংলাদেশের কোনো লাভ হবে না। তারা (ভারত) আকাশ, স্থল ও নৌপথে অংশীদারত্ব দিয়েছে। অংশীদারত্ব ও কানেক্টিভিটি নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।
‘প্রশ্নটা হলো- বাংলাদেশ কী পেল? এই মূল প্রশ্নের উত্তর- আমরা কিছুই অর্জন করিনি।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখনও তিস্তাসহ অন্যান্য অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা পায়নি। সীমান্ত হত্যা বন্ধ হয়নি। বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
‘তাই আমরা সমঝোতা স্মারক নিয়ে সত্য কথা বলছি। আমরা কোনো ষড়যন্ত্র করছি না। বরং অবৈধ শাসক গোষ্ঠী বাংলাদেশকে অন্যের মুখাপেক্ষী করার ষড়যন্ত্র করছে।’
এর আগে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নতুন পদপ্রাপ্তদের সঙ্গে নিয়ে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান মির্জা ফখরুল। এ সময় তারা মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করেন।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রের সব কাঠামো ধ্বংস করে বাংলাদেশে একদলীয় শাসন কায়েম করে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করেছে।
‘দেশের মানুষ আইনের শাসনের অভাবে ন্যায়বিচার পাচ্ছে না। আর্থিক অনটনের কারণে সাধারণ মানুষ কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আইনের শাসন ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ ত্যাগের অঙ্গীকার করে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আজ জিয়াউর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে শপথ নিয়েছেন।’
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের দল সব সময় যে কোনো ধরনের স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে। আর আওয়ামী লীগ সরকার জঙ্গিবাদ দমনের নামে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হয়রানি ও কারাগারে আটকে রাখছে।’