জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) জারি করা নতুন আদেশ না মেনে বেনাপোল কাস্টম হাউস তার নিজস্ব আইনে অতিরিক্ত শুল্ক ও কর আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে বেনাপোল বন্দরে মাছ, ফল ও সবজির পচনশীল পণ্যের প্রায় অর্ধশতাধিক ট্রাক আটকা পড়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের জারিকৃত আদেশ কার্যকরসহ অতিরিক্ত মালামালের জন্য জরিমানার করার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বেনাপোল কাস্টমসাবের সামনে বিক্ষোভ করেন আমদানিকারকরা।
এসময় আমদানি-রপ্তানি বন্ধের হুমকি দেয় বেনাপোল আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন।
ব্যবসায়ীরা জানান, গত ২৩ জুন এনবিআর পচনশীল পণ্যের শুল্কায়নের ক্ষেত্রে নতুন নির্দেশনা জারি করে। ঢাকায় অনুষ্ঠিত অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিশনারেটের এক সভায় আমদানিকৃত শুল্কায়ন সমতা বজায় রাখা এবং আমদানিকারকদের জন্য সুষম সুবিধা নিশ্চিতের কারণ দেখিয়ে আমদানি পর্যায়ে মাছ, শুঁটকি, টমেটো, পান ও বিভিন্ন ফলের সঠিক পরিমাপ নির্ধারণে পণ্যবাহী ট্রাকের চাকার সংখ্যার ভিত্তিতে নুন্যতম ওজন প্রস্তাব ও সুপারিশ করা হয়, যা বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর করে বেনাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এতে লোকসানের কবলে পড়ে আমদানিকারকরা। এসময় পণ্য চালান খালাস না নেয়ায় বন্দরে আটকা পড়ে প্রায় অর্ধশতাধিক খাদ্যদ্রব্য জাতীয় পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক। এদের মধ্যে যে সমস্ত আমদানিকারকের ট্রাকের চাকার সংখ্যা অনুযায়ী ওজন ঠিক ছিলো তাদের মালামাল খালাস হয়েছে।
বেনাপোল আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, ‘এনবিআরের জারিকৃত নতুন আদেশের অনুচ্ছেদ ৪ মুল্যায়ন না করায় আমরা কাস্টমস থেকে পণ্য চালান খালাস নিতে পারছেনা। আদেশে বলা আছে, নতুন আদেশের যে প্রাকৃতিক ওজন নির্ধারণ করা হয়েছে, সে ওজনের অতিরিক্ত বা মালামাল কম থাকলে কাস্টম এবং শুল্ক গোয়েন্দার উপস্থিতিতে পণ্যটি পরীক্ষণ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। অথচ বেনাপোল কাস্টম হাউস সেটা করছে না। মালামাল পরীক্ষা করে মালমাল কম বা বেশি থাকলে অতিরিক্ত শুল্প-করাদি পরিষদসহ জরিমানার টাকা আদায় সাপেক্ষে আমদানি করা পচনশীল কাঁচামাল জাতীয় পণ্য বন্দর থেকে খালাস নিতে পারবে।’
তিনি বলেন, ‘স্লাভ অনুযায়ী মাল কম থাকলেও যে পরিমাণ পণ্য থাকার কথা সেই পরিমাণ পণ্যেরই শুল্ক দিতে হবে। একই দেশে দুই ধরনের নিয়ম। মাল বেশি থাকলে জরিমানা দিতে হবে আবার কম থাকলেও স্লাভ অনুয়ায়ী ওই ট্রাকে যে পরিমাণ মাল থাকার কথা তার চেয়ে কম থাকলেও অতিরিক্ত ডিউটি দিতে হবে। এটা কোনো নিয়ম?’
২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি চলমান সমস্যা নিরসন না হয় তবে ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
তিনি আরও বলেন, ‘মালামাল বেশি এলে অতিরিক্ত শুল্ক দিতে হয়। কম এলে কেন শুল্ক কম নেয়া হবে না? আমাদের ওপর এভাবে হয়রানি করলে এপথ দিয়ে আমরা আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ রাখব।’
এ ব্যাপারে বেনাপোল কাস্টম কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও কাউকে পাওয়া যায়নি।