বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রাখাইনে সংঘাত, সীমান্তে ফের জড়ো হচ্ছে রোহিঙ্গারা

  • প্রতিনিধি, টেকনাফ (কক্সবাজার)   
  • ২৭ জুন, ২০২৪ ২৩:৪৩

মিয়ানমারে মংডু শহরের হারি পাড়ার রশিদ উল্লাহর বাড়িতে জান্তা সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় প্রায় ১০ জন নিহত এবং অনেকে আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন মিয়ানমারের মুন্ডি পাড়ার বাসিন্দা ফয়সাল। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগ নারী ও শিশু বলে জানিয়েছেন তিনি।

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে হওয়া গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দে আবারও কেঁপেছে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সীমান্ত এলাকা। মঙ্গলবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টেকনাফ সীমান্তের হ্নীলা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম এবং টেকনাফ পৌরসভার সহও সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ এলাকা থেকে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে।

এদিকে মিয়ানমারে মংডু শহরের হারি পাড়ার রশিদ উল্লাহর বাড়িতে জান্তা সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় প্রায় ১০ জন নিহত এবং অনেকে আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন মিয়ানমারের মুন্ডি পাড়ার বাসিন্দা ফয়সাল। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগ নারী ও শিশু বলে জানিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে বিমান হমলায় এ ঘটনা ঘটে।

মংডু মুন্ডি পাড়ার রোহিঙ্গার চুরি করে বাংলাদেশের পালিয়ে ইকরাম বলেন, ‘মিয়ানমার মংডু শহরের জান্তা বাহিনীর চৌকির দখলকে কেন্দ্র করে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) ও মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) মধ্যে আজ ৩টার দিকে সংঘর্ষ হয়। এসময় মংডু শহরের আশিক্ষা পাড়া, গইন্যা পাড়া ও গর্জনিয়া পাড়াসহ কয়েকটি গ্রামে বিমান হামলা চালায় জান্তা বাহিনী। এতে অনেক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। অনেক রোহিঙ্গা প্রাণে বাঁচতে বাংলাদেশে আসার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ১৫ জন রোহিঙ্গা ছোট নৌকা নিয়ে টেকনাফ শাহপরীরদ্বীপ নাফ নদী দিয়ে এখানে আসি। আমাদের আত্মীয়-স্বজন নিয়ে আসার জন্য খবর নিচ্ছি।’

মঙ্গলবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত রাখাইনের মংডুতে তুমুল সংঘর্ষে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত কেঁপে ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে সেখানকার (মংডুতে) রোহিঙ্গারা টিকতে না পেরে প্রাণে বাঁচতে এদিক-সেদিক যাওয়ার চেষ্টা করছেন। আবার অনেকে সীমান্ত দিয়ে এপারে প্রবেশের অপেক্ষা করছেন। তবে রোহিঙ্গারা যাতে নতুন করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য সীমান্ত-নাফ নদে বিজিবি-কোস্ট গার্ড সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

এদিকে, নতুন করে রোহিঙ্গা ঢল নামার আশঙ্কা করেছে ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গারা।

মো. ইমরান নামের এক রোহিঙ্গা বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ওপরে প্রতিনিয়ত হামলা হচ্ছে। এতে অনেক রোহিঙ্গা মারা যাচ্ছেন। এভাবে হামলা অব্যাহত থাকলে মিয়ানমারে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে পারে।’

এদিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংঘাতের জের ধরে নাফ নদের ওপারে মংডু শহরের কয়েকটি এলাকার আশপাশে রোহিঙ্গারা জড়ো হয়ে রয়েছে বলে জানা গেছে। তারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে টেকনাফে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন সীমান্তের বাসিন্দারা।

বিস্ফোরণের শব্দে আবার কাঁপছে সীমান্ত

জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হ্নীলার চৌধুরীপাড়া ও সাবরাংয়ের শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তের ওপারে থেমে থেমে গোলাগুলির পাশাপাশি অন্তত ২০০টি মর্টারশেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।

সীমান্তে কিছু রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে বলেও শুনেছেন জানিয়ে শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা মনির হোসেন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে থেকে থেমে থেমে গোলা চলছে ওপারে। ফলে বিজিবি ও কোস্টগার্ড রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে তৎপর রয়েছে। তাছাড়া সেখানে কিছু রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে, কিন্তু কিছু রোহিঙ্গা পুশব্যাক করলেও কিছু রোহিঙ্গা দালালের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় চলে যাচ্ছে।’

বাংলাদেশ বসবাসকারী রোহিঙ্গা মো. ইউনুছ জানান, দুই পক্ষের গোলাগুলিতে অনেক রোহিঙ্গা নিহত হচ্ছেন। এখন প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ছাড়া তাদের আশ্রয় নেয়ার মতো কোনো জায়গা নেই। তাই যেকোনো সময় তারা বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে ছুটতে পারেন।

তিনি বলেন, ‘যারা এপারে আসার জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে, তাদের এখানে না আসতে নিষেধ করা হচ্ছে।’

বিজিবির ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকালে ৩ হাজার ৩৫৪ রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। পরে তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠায় বিজিবি। তাদের মধ্যে ৮৪৮ জন নারী, ৭৪৯ শিশু ও এক হাজার ৭৫৭ জন পুরুষ। এছাড়া তিন রোহিঙ্গাকে থানায় দেয়া হয়েছে।

বিজিবির টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘ওপারে সংঘাতের কারণে মাঝে মাঝে এপারে গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে। তবে রাখাইনের পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণে রেখেছে বিজিবি। বিশেষ করে, অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদ ও সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে।’

জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘মিয়ানমারের গোলার বিকট শব্দ বেড়ে চলছে। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে এবং যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে সীমান্তে আমাদের বিজিবি-কোস্টগার্ড প্রস্তুত রয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর