জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) এক নারী শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে দুই বহিরাগত যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় ধর্ষণচেষ্টা মামলা করেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান।
আটক ৩২ বছর বয়সী নাজমুল হাসান সাভারের লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (বিপিএটিসি) ক্যাফেটেরিয়ায় চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। আর ২৮ বছর বয়সী আলামিন ওই প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন প্রকল্পে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কর্মরত।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক মো. নূর আলম বলেন, ‘যে দুজনকে আটক করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইন (সংশোধিত) ২০০৩-এ মামলা করেছেন জাবির এক নারী শিক্ষার্থী। আটক দুজন ছাড়াও এক অজ্ঞাত ব্যক্তির নামও মামলায় রয়েছে।’
এদিকে মামলার বাদী বলেন, ‘বন্ধুর সঙ্গে আমি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বোটানিক্যাল গার্ডেনের পাশ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মনপুরা এলাকার দিকে যাচ্ছিলাম। এসময় অপরিচিত তিন যুবক আমাদের পথরোধ করে দাঁড়ায়। তারা আমাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় এবং ২০ লাখ টাকা দাবি করে। অন্যথায় আমাকে শারিরীকভাবে হেনস্তা ও মেরে ফেলার হুমকি দেয়।’
তিনি বলেন, ‘প্রায় তিন ঘণ্টা আটকে রাখার পর আমার বন্ধু টাকা আনার কথা বলে সুকৌশলে বন্ধুদের ফোন করে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সালাম-বরকত হল থেকে একদল শিক্ষার্থী গিয়ে আমাদের উদ্ধার করে। সেসময় একজন ছিনতাইকারী পালিয়ে যায়। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বাকি দুইজনকে মারধর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখায় সোপর্দ করে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা (উপনিবন্ধক) জেফরুল হাসান চৌধুরী সজল বলেন, ‘ঘটনা জানার পর তাৎক্ষণিকভাবে প্রক্টর মহোদয়কে জানিয়েছি। পরে রেজিস্ট্রার মহোদয়ের অনুমতি সাপেক্ষে আটকদের পুলিশে সোপর্দ করি।’
প্রক্টরিয়াল বডির নিষ্ক্রিয়তা
তবে ঘটনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কিংবা প্রক্টরিয়াল বডির কাউকে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
এ বিষয়ে প্রক্টর আলমগীর কবীর বলেন, ‘ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর একটি অভিযোগপত্র আমরা পেয়েছি, যদিও থানায় মামলা হয়ে গেছে।’
এ ঘটনার পর প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের কাউকে না পাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হতে পারিনি। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্যের জানাজা শেষ করে আসতে রাত ৮টা পেরিয়ে যায়। তবে সহকারী প্রক্টরদের কেউ কেন উপস্থিত ছিল না, সে ব্যাপারটি আমি দেখব।’