বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কোটালীপাড়ায় শতাধিক খাল দখল করে মাছ চাষ

  • প্রতিনিধি, কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ)   
  • ২৩ জুন, ২০২৪ ১৯:৫৪

দখলকৃত খাল উদ্ধারে প্রশাসন থেকে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। উপজেলা প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করায় জনমনে নানা ধরনের প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। মুক্ত জলাশয় থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করা মৎস্যজীবী ও সাধারণ জনগণ দ্রুত দখলকৃত খাল উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন।

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় অর্ধশত ছোটবড় বিলের প্রায় শতাধিক সরকারি খাল দখল করে মাছ চাষ করছে প্রভাবশালী মহল। এর ফলে বিলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি, পরিবেশ বিপর্যয়, নৌ-চলাচল ব্যাহত এবং কৃষিকাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

দখলকৃত খাল উদ্ধারে প্রশাসন থেকে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। উপজেলা প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করায় জনমনে নানা ধরনের প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। মুক্ত জলাশয় থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করা মৎস্যজীবী ও সাধারণ জনগণ দ্রুত দখলকৃত খাল উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন।

উপজেলার রামনগরের বিল, রথিয়ারপাড় বিল, মাছপাড়ার বিল, কুমুরিয়া বিল, বৈকণ্ঠপুর বিল, লখণ্ডার বিল, মুশুরিয়ার বিল, পিড়ারবাড়ি বিল, পলোটানা বিল, ধোরাল বিল, চিথলিয়ার বিল, পশ্চিম দিঘলিয়ার বিল, পূর্বপাড়া বিল, চিত্রাপাড়া-শুয়াগ্রাম বিল, সাতুরিয়ার বিল, কান্দি বিল, আশুতিয়ার বিল, পোলশাইল বিল, বর্ষাপাড়া বিল, ছত্রকান্দা বিল, দেওপুরা বিল, সোনাখালি বিল, ফুলবাড়ি বিল, কোনের বাড়ি বিল, বহলতলী বিল, চাটখালির বিল, তারাইল বিল, গোপালপুর বিল, চরগোপালপুর বিল, গৌতমেরা বিল, মাচারতারা বিল, গজালিয়া বিল, তালপুকুরিয়া বিল, হিজলবাড়ি বিল, তারাকান্দর বিল, কুঞ্জবন বিল ও পারকোনা বিলসহ প্রায় অর্ধশত ছোটবড় বিল রয়েছে। এসব বিলের শতাধিক খাল দখলে নিয়ে মাছ চাষ করছে প্রভাবশালীরা।

পিঞ্জুরী ইউনিয়নের দেওপুরা বিলের খাল দখলের অভিযোগ পরশ শিকদারের বিরুদ্ধে। ছবি: নিউজবাংলা

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার পিঞ্জুরী ইউনিয়নের দেওপুরা খাল দখল করে মাছ চাষ করেছেন বহলতলী গ্রামের পরশ সিকদার, সোনাখালি কুমলাবতী খাল দখল করে মাছ চাষ করেছেন ইউপি সদস্য লায়েক শেখ, তারাইল খাল দখল করে মাছ চাষ করেছেন নির্মল মাঝি, ফুলবাড়ি খাল দখল করে মাছ চাষ করেছেন ইউছুব আলী দাড়িয়া, কোনেরবাড়ি খাল দখল করে মাছ চাষ করেছেন মুজিবুর রহমান শেখ এবং কুঞ্জবনের খাল দখলে করে মাছ চাষ করেছেন বিপুল বাড়ৈ।

অদৃশ্য কারণে এসব খাল উদ্ধারে উপজেলা প্রশাসন থেকে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। খাল দখলের কারণে নৌ-চলাচল ও খালগুলোর আশপাশের এলাকার কৃষকদের কৃষিকাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে বিলের পরিবেশ, ধ্বংস হচ্ছে দেশীয় মাছ ও জীববৈচিত্র্য।

দখলকৃত খাল থেকে আগে যেসব মৎস্যজীবী মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন, তারা এখন প্রভাবশালীদের বাধার মুখে খালে সামতে পারছেন না। যার ফলে বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।

উপজেলার গজালিয়া গ্রামের মৎস্যজীবী সুরেশ বাড়ৈ বলেন, ‘আগে আমরা এলাকার বিভিন্ন খাল বিল থেকে দেশীয় মাছ ধরে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করতাম। এই মাছ বিক্রির টাকা দিয়ে আমাদের সংসার চলত। এখন আর এসব খালবিল থেকে মাছ ধরতে পারছি না। ফলে আমরা এখন বেকার হয়ে পড়েছি।’

পিঞ্জুরী ইউনিয়নের সোনাখালী বিলের কুমলাবর্তী খাল দখল করে ইউপি সদস্য লায়েক শেখ মাছ চাষ করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। ছবি: নিউজবাংলা

উপজেলা দেশীয় মাছ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম হাজরা মন্নু বলেন, ‘উপজেলার ছোটবড় প্রায় শতাধিক খাল দখল করে মাছ চাষ করছেন প্রভাবশালী। এতে দেশীয় মাছ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস এবং নৌ চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন বিলের নকশা দেখে দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব খাল উদ্ধারের দাবি জানাচ্ছি।’

উল্লিখিত দখলকারীদের কাছে খাল দখলের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহীনুর আক্তার বলেন, ‘দখলকৃত খালগুলো উদ্ধারে আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’

এ বিভাগের আরো খবর