বরগুনার আমতলীর দুর্ঘটনায় মাদারীপুরের একই পরিবারের নিহত সাতজনের দাফন শেষ হয়েছে। রোববার সকাল ১০টার দিকে দুই দফা জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।
এ সময় নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী দোষীদের তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করেন।
বরগুনার আমতলী এলাকার শনিবার দুপুরে হলদিয়া-চাওড়া সীমান্তবর্তী চাওড়া-হলদিয়া খালের ওপর লোহার সেতু ভেঙে মাইক্রোবাস পানিতে পড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় নারী ও শিশুসহ ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত ৯ জনের মধ্যে সাতজনই মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার ভদ্রাসন ইউনিয়নের সাহাপাড়া এলাকার সাবেক সেনা সদস্য মাহাবুবর রহমান সবুজের পরিবারের সদস্য।
নিহতদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, খালাতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় পরিবারের ৭ সদস্য হারান সাবেক সেনা সদস্য মাহাবুবুর রহমান সবুজ। তিনি ওই এলাকার ফজলুর রহমান খানের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, গত বুধবার সকালে শিবচর থেকে মাহাবুব ও তার পরিবারের সদস্যরা খালাতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বরগুনার উদ্দেশে রওনা হন। শনিবার দুপুরে আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার সময় মাহাবুব ও তার পরিবারের সদস্যদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি খালে পড়ে যায়।
এ ঘটনায় নিহত ৯ জন হলেন মাহাবুবের ভাই সোহেলের স্ত্রী ৩০ বছর বয়সী রাইতি, শাশুড়ি ৪০ বছর বয়সী রুমি বেগম, মাহাবুবের মা ৪০ বছর বয়সী ফরিদা বেগম, মামি ৪০ বছর বয়সী মুন্নী বেগম, তার সন্তান ৭ বছরের তাহিয়া ও ১১ বছরের তাসদিয়া, আরেক মামি ৪০ বছর বয়সী ফাতেমা বেগম। এছাড়া আমতলীর দক্ষিণ তক্তাবুনিয়ার জহিরুল ইসলামের স্ত্রী জাকিয়া এবং তাদের মেয়ে ৫ বছরের রিদি।
নিহতের স্বজন মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘রাতে মৃতদেহ বাড়িতে আনা হলে সকাল ১০টায় জানাজা শেষে দাফন করা হয়। আমরা এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করছি। সেই সাথে যাদের অবহেলার কারণে এমন তাজা প্রাণ চলে গেলে তাদেরও শাস্তি দাবি করছি। যদি ব্রিজটি আগেই সতর্কতা বার্তা লাগানো থাকতো তাহলে কোনোভাবেই মাইক্রোবাসটি এভাবে পার হতো না, এখানে কর্তৃপক্ষের লাফলতি আছে। তাদের শাস্তি দাবি করছি।’
নিহত ফাতেমা বেগমের স্বামী বাবুল মাতুব্বর বলেন, ‘আমরা দোষীদের শাস্তি চাই। শুনছি, এলজিইডি থেকে তিন বছর আগে ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু এরপরেও কোন যান চলাচলের অনুমতি দেয়া হলো। যদি বন্ধ থাকতো তাহলে আমাদের এমন সর্বনাশ হতো না।’
শিবচর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়শা সিদ্দিকা মুন্নী বলেন, ‘আমরা পুরো শিবচর উপজেলাবাসী শোকে স্তব্ধ। কোনোভাবেই এ শোক সইবার না। তারপরেও বলবো, যারা দোষী তারা যেন কোন ভাবেই আইনের ফাঁক দিয়ে বের হয়ে যেতে না পারে। আমরাও উপজেলা থেকে এ বিষয়ে খোঁজ খবর রাখব।’