বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

টাকা পেলেই রোহিঙ্গাদের জন্ম নিবন্ধন বানিয়ে দিতেন তিনি

  • প্রতিনিধি, কুমিল্লা   
  • ২১ জুন, ২০২৪ ১৯:৫৫

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মুরাদনগর সদর ইউনিয়নের একাধিক বাসিন্দা জানান, পর্যাপ্ত টাকা পেলে ইউপি সচিব যে কারও যে কোনো অসংগতিপূর্ণ ঠিকানায় জন্মনিবন্ধন বানিয়ে দেন। এমন কাজে সদর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান কাজী তুফরীজ এটন জড়িত থাকারও অভিযোগ রয়েছে।

ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে রোহিঙ্গা যুবকের জন্য জন্মনিবন্ধন তৈরির অভিযোগে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন গ্রেপ্তার হয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তিনি ভুয়া ঠিকানায় রোহিঙ্গাদের জন্মনিবন্ধন তৈরি করে দিতেন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কোম্পানীগঞ্জ-মুরাদনগর সড়কের নিমাইকান্দি এলাকা থেকে ইসমাইলকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। ইসমাইল কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার গুনাইনন্দী গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে।

গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজেস বড়ুয়া বলেন, ‘ইউপি সচিব ইসমাইলকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে এক রোহিঙ্গা যুবককে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে জন্ম নিবন্ধন তৈরি করে দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন তিনি। শুক্রবার বিকেলে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।’

ঘটনা আলোচনায় যেভাবে

চলতি বছরের জানুয়ারিতে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসে মো. ইয়াছিন নামে ১৯ বছর বয়সী এক রোহিঙ্গা। সে মিয়ানমারের বলিবাজার এলাকার সৈয়দ হোসেনের ছেলে। বাংলাদেশে আসার পর কক্সবাজার বালুখালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৯ নম্বর ব্লকে থাকতো সে।

ইয়াসিন ১৫ ফেব্রুয়ারি পাসপোর্ট তৈরির জন্য মুরাদনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঘোড়াশাল গ্রামের ভুয়া পরিচয়ে জন্ম নিবন্ধন বানিয়ে কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে যায়। এ সময় পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের সন্দেহ হয়। পরে তারা রোহিঙ্গা যুবক ইয়াছিনকে কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।

গোয়েন্দা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রোহিঙ্গা যুবক ইয়াছিন জানায়, তার চাচাতো ভাই উসমান কুমিল্লা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সংলগ্ন মদিনা ট্রাভেলসের হাসান মাহমুদ ও মোশাররফ নামে দুই দালালের সঙ্গে পাসপোর্ট করার চুক্তি করে। চুক্তি অনুযায়ী ওই দুজন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার পশ্চিম ঘোড়াশাল গ্রামের ভুয়া ঠিকানায় রোহিঙ্গা যুবক ইয়াছিনের সব কাগজপত্র তৈরি করে দেয়।

গোয়েন্দা পুলিশ এ ঘটনায় সে সময় কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করে। একইসঙ্গে রোহিঙ্গা যুবক কীভাবে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করেছে তা তদন্তে নামে তারা।

তদন্তে ইউপি সচিব ইসমাইল হোসেনসহ বেশ কয়েকজনের সম্পৃক্ত থাকার তথ্য পান গোয়েন্দারা। তথ্য অনুসন্ধানের পর বৃহস্পতিবার ইউপি সচিব ইসমাইলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মুরাদনগর সদর ইউনিয়নের একাধিক বাসিন্দা জানান, বৈধভাবে অনেকেই জন্মনিবন্ধন বানাতে পারে না। অথচ পর্যাপ্ত টাকা পেলে ইউপি সচিব যে কারও যে কোনো অসংগতিপূর্ণ ঠিকানায় জন্মনিবন্ধন বানিয়ে দেন। এমন কাজে সদর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান কাজী তুফরীজ এটন জড়িত থাকারও অভিযোগ রয়েছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান কাজী তুফরীজ এটন বলেন, ‘রোহিঙ্গা যুবকের জন্মবিন্ধন বানানোর ঘটনা ঠিক নয়। আইডি হ্যাক হয়েছে। বিষয়টি আমরা মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি।’

মুরাদনগর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত উদ্দিন বলেন, ‘রোহিঙ্গা যুবকের জন্মনিবন্ধন তৈরি সংক্রান্ত সরকারি মামলায় ইউপি সচিবকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের সেবা কার্যক্রম চালু রাখার জন্য ভারপ্রাপ্ত হিসেবে একজনকে দায়িত্ব দেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর