কুড়িগ্রামে তিস্তা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীসহ ১৬টি নদীর পানি প্রতিদিনই বেড়ে চলছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক অবনতি হয়েছে।
শুক্রবার তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার এবং ধরলা নদীর পানি ফুলবাড়ির শিমুলবাড়ি পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। এতে করে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাফসান জানি শুক্রবার জানান, বিকেল ৩টায় দুধকুমার নদের পাটেশ্বরী পয়েন্টে পানি সামান্য কমে এখন বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানি ২৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং ধরলা নদীর পানি ফুলবাড়ি উপজেলার শিমুলবাড়ি পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে অন্য সব নদ-নদীর পানিও বিপৎসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে নদীর পানি বাড়ার কারণে তিস্তা ও ধরলা নদীসহ অন্যা নদ-নদীর অববাহিকার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ভেঙে পড়েছে এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা। তলিয়ে গেছে বিভিন্ন কাঁচা সড়ক। অনেককেই নৌকা এবং কলাগাছের ভেলা দিয়ে যাতায়াত করতে দেখা গেছে।
বিভিন্ন এলাকায় ডুবে গেছে বাদাম, পাটক্ষেত, ভুট্টা, মরিচ ও শাক-সবজি ক্ষেতসহ বিভিন্ন উঠতি ফসল। এসব এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির কারণে সাধারণ মানুষরা পড়েছেন বিপাকে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, দুর্যোগ কবলিত পরিবারে সংখ্যা প্রায় চার হাজার। পানিবন্দি প্রায় ২০ হাজার মানুষ। একইসঙ্গে বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে ১৪৪ টন জিআর চাল এবং নগদ ১০ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ত্রাণ হিসাবে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (ওয়েস্ট রিজিওন) একেএম তাহমিদুল ইসলাম উলিপুরের বেগমগঞ্জসহ বিভিন্ন ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন।
তিনি বলেন, ‘একদিকে বন্যা আবার অন্যদিকে নদী ভাঙন এ জেলার জন্য দুর্ভাগ্য। এ জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ছোট বড় ১৬টি নদ নদীর সবগুলোই ভাঙন প্রবন। এর মধ্যে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার সবচেয়ে বেশি ভাঙন প্রবন। নদী ভাঙন প্রতিরোধে চলমান কার্যক্রম পরিদর্শনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সমস্যা নিরসনে কী কী উদ্যোগ নেয়া যায় তা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিবেচনা করবে।’