আশ্রয়কেন্দ্রে এসে খাদ্য সংকটে পড়েছেন সুনামগঞ্জের বন্যার্তরা। শিশুদের নিয়ে মায়েরাও রয়েছেন কষ্টে। ক্ষুধা সহ্য করতে না পেরে কান্নাকাটি করছে শিশুরা।
বুধবার বিকেলে শহরের এইচএমপি উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সুনামগঞ্জ শহরের ময়নার পয়েন্টে ভাড়া বাসায় থাকেন আরিফুলন্নেছা। তিনি বলেন, ‘ঘরে কোমর সমান পানি। গত কয়েকদিন বন্যার জন্য আমার গাড়িচালক স্বামীর রোজগার হয়নি। দুই দিন আগে এখানে এলেও কোনো সহায়তা পাইনি। রান্নাবান্না করারও সুযোগ নেই। কোনোরকমে দিন কাটছে আমাদের। আজ সকালে একজন এসে রুটি আর কলা দিয়ে গেছে।’
আরিফুলন্নেছার কথার সমর্থন জানালেন পাশে থাকা তাসলিমা। এসময় খাবারের জন্য ছোট্ট শিশু কান্নাকাটি করায় শাসন করছিলেন তিনি।
আশ্রয়কেন্দ্রে আসা মিনা লাল, রিতা লাল, সাম, রাবেয়া, সাজন বলেন, মঙ্গলবার থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে আছি। কেউ আমাদের এখনও সাহায্য করেনি। হাতে টাকাও নেই, তাই কিছু কিনতেও পারছি না। আপনারা দয়া করে কিছু করুন।
শান্তিবাগের বাসিন্দা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই ব্যক্তি বলেন, ঘরে কোমর পানি। ঘরের জিনিসপত্র কিছু আসার সময় নিয়ে এসেছি, কিছু পাশের বাসায় রেখে এসেছি। অন্যান্য সব কিছু পানির নিচে।
এখানে বাথরুম ও খাবার পানির সুবিধা থাকলেও খাবার কষ্টে আছি আমরা। সরকারি কোনো ধরনের সহযোগিতা পাইনি। মঙ্গলবার রাতে আমরা আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছি। আজ (বুধবার) সকালে এক বোতল পানি ও নাটি বিস্কুট দিয়ে গেছে একজন।’
এদিকে তেঘরিয়ার বাসিন্দা সংবাদপত্র বিপণনকর্মী নুর হোসেন বলেন, ‘তেঘরিয়া মসজিদে আশ্রয় নিয়েছি। আমাদের পাড়ার ২০ ঘর মানুষ এখানে আশ্রয় নিয়েছে। এখন পর্যন্ত কেউ সহায়তা করতে আসেনি।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘৫৪১টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১৮ হাজার ৪২৯ জন বন্যার্ত আশ্রয় নিয়েছেন। যারা আশ্রয়কন্দ্রে এসেছেন সকলেই খাবার নিয়ে উঠেছেন। যারা খাবার নিয়ে ওঠেননি, তারা চাইলেই শুকনো খাবারসহ খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।’