সুনামগঞ্জে নদীর পানি কিছুটা কমার দিকে থাকলেও হাওর অঞ্চল ও পৌর শহরের পাড়া-মহল্লায় বাড়ছে। বন্যা উপদ্রুত এলাকার মানুষজন পরিবার-পরিজন নিয়ে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটে যাচ্ছেন।
সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে মঙ্গলবার সকাল ৯টায় বিপদসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে বুধবার সুরমা নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে।
মঙ্গলবার রাতে জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেও তেমন বৃষ্টি হয়নি। তবে ভোর থেকে একটানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের নতুন পাড়া, শান্তিবাগ, ধোপাখালী, বাঁধনপাড়া, বলাকা, মোহাম্মদপুর, ষোলঘর, নবীনগর, কাজীর পয়েন্টসহ বিভিন্ন এলাকায় পানি বেড়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, একতলা বা কাঁচা ঘরে থাকা মানুষজন নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন। সবার চোখে-মুখে ২০২২ সালের সেই ভয়াবহ বন্যার আতঙ্ক।
তবে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষজন। ঝাওয়ার হাওরের পাশে বসবাসকারী অধিকাংশ মানুষের ঘরের চাল ছুঁইছুঁই পানি। পরিবার-পরিজন নিয়ে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটে যাচ্ছেন তারা।
এদিকে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় লোকজন।
পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক, দোয়ারাবাজার, শান্তিগঞ্জ, জগন্নাথপুর, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, মধ্যনগর, দিরাই, শাল্লা ও জামালগঞ্জ উপজেলা। তবে বেশি বন্যা আক্রান্ত হয়েছে ছাতক, দোয়ারাবাজার ও সদর উপজেলা।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানিয়েছেন, সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই নদী ছাতক উপজেলায় বিপদসীমার ১৪৬ সেন্টিমিটার উপরে রয়েছে। আর দিরাই উপজেলায় ১৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে সুরমা নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ১০০ মিলিমিটার, লাউড়ের গড়ে ৭৮ মিলিমিটার, ছাতকে ৮৪ মিলিমিটার ও দিরাইয়ে ৭৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, নদীর পানি কিছুটা কমলেও বর্ষণ অব্যাহত থাকায় পানি বাড়তে পারে। বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।