বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বড় গরু নিয়ে বিপাকে শেরপুরের খামারিরা

  • প্রতিনিধি, শেরপুর   
  • ১৫ জুন, ২০২৪ ২২:০০

শেরপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রেজওয়ানুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘বড় গরুগুলো বিক্রি করতে আমরাও খামারিদের সহযোগিতা করছি। অনলাইনে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছি।’

কোরবানির পশুর হাটগুলোতে ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি থাকায় বড় গরু নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে শেরপুরের খামারি ও মালিকরা। জেলার হাটগুলোতে বড় গরুর কিনতে চাইছে না প্রায় কেউই।

জেলায় কোরবানির পশুর হাট জমে ওঠেছে। জেলার ২৮টি পশুর হাটে বিপুল সংখ্যাক পশু উঠছে, কিন্তু বেচাকেনা হচ্ছে কম। চাহিদামতো দামও পাচ্ছেন না বিক্রেতারা। পশুর দাম না থাকায় বিপাকে পড়েছেন খামারিরা।

আর সুলতান, রুজু, রাজা বাহাদুর, কালু লালুর মতো বাহারি নামের পশুসহ বড় বড় গরুগুলো বিক্রি হচ্ছে না। জেলার সবচেয়ে বড় গরু সুলতানকে নিয়ে গেছে ঢাকায়। রজুসহ হাজারো বৃহৎ আকারে গরু বাজারে তোলা হলেও বিক্রি হচ্ছে না। বাজেট কম থাকায় ক্রেতারা বড় ষাড় গরু কিনছে। সবার নজর ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর দিকে। অনেক খামারি শেষ পর্যন্ত বড় গরু বিক্রি করতে পারবে কি না, তা নিয়ে আছেন শঙ্কায়। জেলায় গত বছরও ৩২ হাজার কোরবানির পশু অবিক্রিত ছিল।

জেলা প্রাণিসম্পদ সূত্রে জানা যায়, জেলার পাঁচটি উপজেলায় ছোটবড় প্রায় ১৩ হাজার ৭৩১ জন খামারি রয়েছেন। এ ছাড়াও অনেক পরিবার ব্যক্তিগতভাবে গরু, মহিষ ও ছাগল পালনের সঙ্গে জড়িত। এবার কোরবানির জন্য শেরপুর জেলায় ৫১ হাজার ২২৫টি পশুর চাহিদা থাকলেও প্রস্তুত হয়েছে ৮৩ হাজার ৮০২টি পশু, যা চাহিদার তুলনায় ৩২ হাজারের বেশি।

পশুগুলোর মধ্যে রয়েছে- ৪০ হাজার ২৭০টি ষাঁড়, ২ হাজার ৮৬৫টি বলদ, ১৩ হাজার ৭৯৪টি গাভি, ১ হাজার ৩৮৬টি মহিষ, ২২ হাজার ৩৯টি ছাগল এবং ৩ হাজার ৪৪৮টি ভেড়া। প্রস্তুত করা এসব পশু স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাইরের হাট-বাজারগুলোতে বিক্রি হওয়ার কথা।

নালিতাবাড়ী উপজেলার কলসপাড় ইউনিয়নের বালুরঘাটার আকবর আলী তিন বছর ধরে লালনপালন করেছেন সুলতান নামের ফ্রিজিয়ান জাতের একটি ষাঁড়। ৩৩ মন ওজনের ষাঁড়টির দাম হাঁকাচ্ছিলেন ১৫ লাখ টাকা, কিন্তু শেরপুরের হাটে কেউ দাম না করায় নিয়ে গেছেন ঢাকায়।

আকবর আলী বলেন, ‘এত কষ্ট করে গরু বড় করলাম। এখন এলাকার হাটে বিক্রি করতে পারতাছি না। তাই ঢাকায় নিয়ে বিক্রির করার জন্য নিয়ে আসছি। গরুটার পেছনে যা খরচ হয়েছে, তা দিয়ে হলেও বিক্রি করে দেব; বড় গরু যতদিন রাখব, তত খরচ বাড়বে।’

শেরপুর গরুর হাটিতে শেরপুর পৌর এলাকার কান্দা পাড়ার কলেজছাত্র তাহমিদ ইশরাদ অলিদ বলেন, ‘আমি প্রতি বছর কোরবানির জন্য গরু পালন করি। এবারও রুজু, কালু ও লালু নামের তিনটি গরু বড় করেছি। এর মধ্যে রুজু সবার বড়। দাম চাচ্ছি সাত লাখ টাকা, কিন্তু কেউ দামই করছে না। এ অবস্থা হলে তো গরু পালন করা যাবে না।’

মাঝারি আকারের গরুর মালিক খলিল বলেন, ‘আমি মাঝারি আকারের গরু তুলেছিলাম, শুরুতেই বিক্রি করতে পেরেছি। লাভ একটু কম হয়েছে। যা বিক্রি করতে চেয়েছিলাম তা বিক্রি না করতে পারলেও বিক্রি হয়েছে- এটাই অনেক।’

আরেক গরুর মালিক খাইরুল বলেন, ‘গরুর দাম এবার একটু কম। তবে মাঝারি ও ছোট গরুর চাহিদা আছে। আমার গরুটা ৯৫ হাজার দিয়া বিক্রি করে দিছি, কিন্তু দেখতাছি বড় গরুর বাজার একদম নাই।’

ক্রেতা চান মিয়া বলেন, ‘ব্যবসা-বানিজ্য ভালো না। তাই এবার এক থেকে দেড় লাখ টাকার মধ্যে একটা গরু কিনব।’

ক্র‍েতা সোহেল মিয়া বলেন, ‘মানুষের কাছে টাকাপয়সা কম থাকায় ছোট ও মাঝারি গরুর প্রতি সবাই ঝুঁকেছে। আমরা তিনজনে মিলে ১ লাখের মধ্যে একটা কিনলাম।’

শেরপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রেজওয়ানুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘শেরপুরের প্রতিটি হাটে আমাদের ভেটেরিনারি টিম কাজ করছে। হাটে যেন কেউ প্রতারিত না হয় এবং অসুস্থ গরুর কেনাবেচা না হয়, এটা আমরা দেখছি।’

তিনি বলেন, ‘এবার বড় গরুর বাজার একটু কম। তবে ছোট ও মাঝারি গরুর বাজার রয়েছে। প্রতিটি হাটে প্রচুর পরিমাণে গরু উঠছে। এতে সহজেই গরু কিনতে পেরে ক্র‍েতারা অনেক খুশি। আবার খামারিরা ভালো গরুর দাম পাচ্ছেন।

‘বড় গরুগুলো বিক্রি করতে আমরাও খামারিদের সহযোগিতা করছি। অনলাইনে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছি।’

এ বিভাগের আরো খবর