মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় টানা তিন দিন অভিযান চালিয়ে ২৯ কিলোমিটার অবৈধ সঞ্চালন লাইন উচ্ছেদ করেছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। সকল অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর দীর্ঘ ৪৬ দিন পরে গ্যাস পাচ্ছেন ওই অঞ্চলের বৈধ গ্রাহকরা।
অভিযানের তৃতীয় দিন বুধবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল ফারুক।
টানা তিন দিনের অভিযানে ভবেরচর, বাউশিয়া ও গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার অবৈধ গ্যাস সঞ্চালন লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়। সম্মিলিতভাবে এই লাইনগুলোর দৈর্ঘ্য প্রায় ২৯ কিলোমিটার। এসব অবৈধ লাইনের মাধ্যমে প্রায় ৭ হাজার অবৈধ সংযোগ চালু ছিল বলে জানিয়েছে তিতাস।
অভিযানে প্রায় ৬ হাজার ফুট বিভিন্ন ধরনের পাইপ ও কয়েক হাজার রাইজার উঠিয়ে নিয়ে যায় তিতাস কর্তৃপক্ষ। এছাড়া গ্যাস চুরি প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ১২ স্পটে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।
তিতাস গ্যাসের সোনারগাঁ আঞ্চলিক বিপণন বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সুরুজ আলম বলেন, ‘শুধু জুন মাসে চারদিন আমরা গজারিয়া অভিযান চালিয়েছি। টানা তিন দিন ধরে আমাদের অভিযান চলছে। অভিযানের তৃতীয় দিন গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের নতুন চাষী এলাকায় অভিযান চালাই আমরা। এ সময় পাঁচ কিলোমিটার অবৈধ গ্যাস সঞ্চালন লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তিন দিনের অভিযানে মোট ২৯ কিলোমিটার অবৈধ সঞ্চালন লাইন বিচ্ছিন্ন করা হলো। আমাদের অভিযান চলমান থাকবে।’
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, তিতাসের মেঘনা আঞ্চলিক বিপণন অফিসের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান, সোনারগাঁ আঞ্চলিক বিপণন বিভাগের ব্যবস্থাপক (মিটার অ্যান্ড ভিজিল্যান্স) আতিকুল ইসলাম প্রমুখ।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ মোল্লাহ বলেন, ‘কয়েক মাস আগেও অভিযান চালিয়ে গজারিয়া উপজেলার সকল অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছিলাম আমরা। তবে অভিযানের পরপর অবৈধ গ্যাস ব্যবহারকারীরা পুনরায় রাতের আঁধারে সংযোগ নিয়ে ফেলেছিল। বাধ্য হয়ে গত ২৭ এপ্রিল থেকে গজারিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখেছি আমরা। টানা অভিযানে আবারো সকল অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। আজকালের মধ্যে বৈধ গ্রাহকরা গ্যাস পাবেন।’
উল্লেখ্য, কোনরকম পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই গত ২৭ এপ্রিল থেকে গজারিয়া উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে রাখে তিতাস। কোম্পানিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই উপজেলায় বৈধ গ্রাহকদের তুলনায় অবৈধ গ্রাহকদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় বাধ্য হয়ে তারা গ্যাস সংযোগ বন্ধ রেখেছে।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতেও এই এলাকায় ২০ দিন গ্যাস সরবারহ বন্ধ রেখেছিল তিতাস।