ঘূর্ণিঝড় রিমালে যাদের ঘর-বাড়ি ভেঙেছে ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের ঘর তৈরি করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘যাদের ঘর-বাড়ি সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে, তাদেরকে আমরা ঘর তৈরি করে দেব। আংশিক ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হবে।’
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের জমির মালিকানা দলিলসহ বাড়ি হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার তিনি এ কথা বলেন।
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা, কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলা এবং ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে সুবিধাভোগীদের কাছে জমির মালিকানা দলিলসহ বাড়ি হস্তান্তর করা হয়।
এদিন সারা দেশে গৃহ ও ভূমিহীন পরিবারকে আরও ১৮ হাজার ৫৬৬টি বাড়ি হস্তান্তর করা হয়। গণভবন প্রান্তে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কয়েকদিন আগে ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরই মধ্যে আমরা তালিকা করেছি কোন কোন এলাকায় কতগুলো ঘর পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; কতগুলো আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। যাদের ঘর-বাড়ি সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে তাদেরকে আমরা ঘর তৈরি করে দেব।
‘আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলো নির্মাণের উপকরণ দিয়ে সহায়তা করব। প্রাকৃতিক দুর্যোগে যারা ক্ষতিগ্রস্ত তাদের পাশে আমরা আছি।’
যাদের ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের চিন্তার কোনো কারণ নেই জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রত্যেকে যেন ঘর নির্মাণ করতে পারেন সেই ব্যবস্থা আমি করে দেব। এরই মধ্যে সেভাবে আমার প্রস্তুতি নিয়েছি। প্রত্যেক এলাকা থেকে আমরা তথ্য সংগ্রহ করেছি। সে অনুযায়ী আমরা সহায়তা পাঠাব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ভূমিহীন মানুষদের জন্য ঘর তৈরি করার জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প নামে একটি প্রকল্প নিয়ে আমরা ঘর বানাতে শুরু করি।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘ঘরগুলো আমরা করে দিয়েছি, সেটা কিন্তু আপনার সম্পত্তি। যে নিচ্ছেন বা পাচ্ছেন সেটা কিন্তু আপনার সম্পত্তি। এটাকে রক্ষণাবেক্ষণ, এটাকে সুন্দরভাবে রাখা, এটার যত্ন নেয়া আপনার দায়িত্ব। বিদ্যুৎ ব্যবহার অবশ্যই আপনাকে সাশ্রয়ী হতে হবে।
‘যারা বিভিন্ন সময়ে নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত তাদেরকে আমরা সহযোগিতা করে যাচ্ছি, তাদেরকে আরও সহযোগিতা করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটা গ্রামকে আমরা নাগরিক সুবিধায় নিয়ে আসব। প্রত্যেকটা গ্রামের মানুষ সুবিধা পাবে। আমরা সেই নাগরিক সুবিধাও নিশ্চিত করে যাচ্ছি।’
ভূমির মালিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোথাও যেন এক ইঞ্চি জমি অনাবাদি না থাকে। অনাবাদি জমিগুলো চাষের আওতায় আনুন। যে যা পারেন উৎপাদন বাড়ান।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকের দিনটা (১১ জুন) আমার জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছিল। আমার সহযোগী সংগঠন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র, দেশের সাধারণ মানুষ সে সময় প্রতিবাদ করেছিল। আজকের দিনে অর্থাৎ ১১ জুন আমি সেই বন্দিখানা থেকে মুক্তি পেয়েছিলাম।’