কাপাসিয়ায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভায় কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে অভিভাবক প্রতিনিধি বিল্লাল হোসেন গণিত বিভাগের এক শিক্ষককে এলোপাতাড়ি মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার সিংহশ্রী ইউনিয়নের কপালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ে সভা চলাকালে ইউএনওর সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয় ওই শিক্ষক বাদী হয়ে শনিবার রাতে কাপাসিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কপালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)। সভাপতি হিসেবে তিনি প্রথম বিদ্যালয়ে আসেন, তাই অভিভাবক প্রতিনিধি বিল্লাল হোসেন উনাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোর দাবি করেন। এরপর ফুল না দেয়ায় বিল্লাল হোসেন প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে তর্কে জড়ান। এ সময় গণিত শিক্ষক এর প্রতিবাদ করেন। একপর্যায়ে বিল্লাল হোসেন উত্তেজিত হয়ে তার দলবল নিয়ে ওই শিক্ষককে এলোপাতাড়ি মারধর করেন।
অভিযোগকারী ওই শিক্ষক কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি কপালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক।
অভিযুক্ত বিল্লাল হোসেন (৪২) উপজেলার সোহাগপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং কপালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য। বিল্লাল হোসেন স্থানীয় সিংহশ্রী ইউনিয়ন যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। অপর সহযোগীরা হলেন একই উপজেলার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম (৪৫), কপালেশ্বর গ্রামের সোহেল রানা সাহেল (৪২), হাবিবুর রহমান (৪৪) এবং নাসির উদ্দিন রবিন (৪১)।
কপালেশ্বর উচ্চবিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একেএম লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমার সামনে অভিভাবক সদস্য বিল্লাল হোসেন সিনিয়র শিক্ষককে পিটিয়ে আহত করেছেন। পরে আমি দুই পক্ষকে নিবৃত করার চেষ্টা করে থামাতে না পেরে কাপাসিয়া থান পুলিশের সহযোগিতায় পরিবেশ শান্ত করেছি।’
কাপাসিয়ার কপালেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসাইন বলেন, ‘স্কুলের অভিভাবক সদস্য বিল্লাল হোসেন আমাকে বলেছিল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) জন্য ফুলের ব্যবস্থা করতে। আমি বলেছি, ইউএনও স্যারকে উপজেলায় ফুল দেয়া হয়েছে। এরপরও ফুল দিতে চাপ দিলে আমি বুঝানোর চেষ্টা করেছি। শনিবার স্কুলে মিটিং চলাকালে বিল্লাল হোসেন ইউএনও স্যারের সামনে আমাকে গালি দেয়। এ সময় সিনিয়র শিক্ষক এর প্রতিবাদ করলে সাবেক সভাপতি ও তার লোকজন তাকে মারধর করে আহত করে।’
আহত শিক্ষকের ভাষ্য, ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই বিল্লাল হোসেনের সহযোগী অজ্ঞাতনামা ৩৫ থেকে ৪০ জন বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে প্রবেশ করে তাকেসহ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসাইন ও ম্যানেজিং কমিটির অন্য সদস্যদের হুমকি দেন।
কপালেশ্বর উচ্চবিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য বিল্লাল হোসেনকে তার ফোনে কল দিয়ে পাওয়া যায়নি। তাই এ বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া নেয়া সম্ভব হয়নি।
কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট আমানত হোসেন খান জানান, যারা শিক্ষককে পিটিয়ে আহত করছেন তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার হওয়া দরকার।